জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়, হোয়াইটওয়াশ জিম্বাবুয়ে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥  শন উইলিয়ামসের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে বড় লক্ষ্য দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকারের জোড়া সেঞ্চুরিতে সহজ জয়ে অতিথিদের হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দলকে জয়ের রেখে ফিরে যাওয়া ইমরুল কায়েস একটুর জন্য ভাঙতে পারেননি তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ রানের বিশ্ব রেকর্ড।

ওয়েলিং মাসাকাদজাকে ছক্কায় ওড়াতে চেয়ে টাইমিং করতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। বাঁহাতি ওপেনারের ক্যাচ লং অনে মুঠোয় জমান এল্টন চিগুম্বুরা। ১১২ বলে ১০ চার ও দুই ছক্কায় ১১৫ রান করেন ইমরুল।

যেন প্রতিজ্ঞা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন সৌম্য সরকার। সেই সঙ্গে ইমরুল কায়েসও। সৌম্যর প্রতিজ্ঞা ছিল নিজেকে নতুন করে চেনানোর আর ইমরুল পণ করেছিলেন এই সিরিজে যে অসাধারণ ব্যাটিং তিনি করছেন, সেটি চালিয়ে যাওয়ার। ২৮৭ রানের লক্ষ্যমাত্রার সামনে ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে অসাধারণ কিছুরই প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা মিটিয়েছেন সৌম্য আর ইমরুল। দুজনই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ২২০ রানের জুটি গড়ে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেটি পুরোপুরি হাতের মুঠোয় নিয়ে আসেন তারা।

দুটি সেঞ্চুরি ও একটি ফিফটিতে সিরিজে ইমরুলের রান ৩৪৯। তিন ম্যাচের সিরিজে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল বাবর আজমের। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৬০ রান করেছিলে পাকিস্তানের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ওয়ানডেতে তৃতীয়বারের মতো একই ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেন বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান।

২০১৫ সালে দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। গত বছর জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন অঙ্কে যান সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়ে ফিরে গেছেন সৌম্য সরকার।

হ্যামিল্টন মাসাকাদজার অফ স্পিন ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় লং অনে ডোনাল্ড টিরিপানোর হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। ৯২ বলে খেলা বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ১১৭ রানের ঝড়ো ইনিংসটি গড়া ৯টি চার ও ৬টি ছক্কায়।

২২০ রানে থেমেছে দ্বিতীয় উইকেট জুটি। ওয়ানডেতে এর চেয়ে বড় জুটি আছে বাংলাদেশের আর একটিই। গত বছর জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পঞ্চম উইকেটে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর ২২৪।

এরআগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটাই শুরু হয়। জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন শেন উইলিয়ামস। এ ছাড়া ব্রেন্ডন টেইলর ৭৫, সিকান্দার রাজা ৪০ ও পিটার মুর ২৮ রান করে সাজঘরে ফিরে।

ইনিংসের শুরুতেই সাইফুদ্দিন ও আবু হায়াদার রনির আক্রমণে দলীয় ৬ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় সফরকারীরা। কিন্তু টেইলর-উইলিয়ামসের দৃঢ়চিত্ত ব্যাটিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দুজনের জুটি থেকে আসে ১৩২ রান।

টেইলর আউট হওয়ার পরে সিকান্দার রাজা মাঠে এসে জুটি গড়েন ক্রিজে থাকা উইলিয়মাসের সঙ্গে। সিকান্দার রাজাকে ৪০ রানে আউট করে ৮৪ রানের এ জুটিও ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু।

এরপর শেন উইলিয়ামস জুটে গড়েন পিটার মুরের সঙ্গে। পিটার মুর আউট হওয়ার আগে এ জুটি থেকে আসে ৬২ রান। এ তিন জুটিতেই মুলত জিম্বাবুয়ে বড় সংগ্রহ করতে পারে।

কিন্তু জিবম্বাবুয়ে ইন্নিংসের শুরুতেই মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন নিজের প্রথম ওভারে জুয়াওকে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান। এর পরের ওভারেই আঘাত হানেন আবু হায়দার রনি। তার বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন মাসাকাদজা। এর পরেই ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে যান শেন উলিয়ামস। মাঠে ছিলেন ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত।

বাংলাদেশের হইয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নেন নাজমুল ইসলাম অপু। এ ছাড়া আবু হায়দার রনি ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন নেন একটি করে উইকেট।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে। সিরিজ জিতলেও একাদশে খুব বেশি অদল বদল না হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ম্যাশ। তবে এদিন দলে তিনটি বদল আনা হয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ ফজলে মাহমুদ রাব্বির জায়গায় দলে এসেছেন সৌম্য সরকার। অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের জায়গায় অভিষেক হয়েছে আরিফুল হকের। বিশ্রাম পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার জায়গায় খেলছেন আবু হায়দার রনি।
স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২৮৬/৫ (৫০ ওভার)

বাংলাদেশ: ২৮৮/৩ (৪২.১ ওভার)

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সোম্য সরকার

Print Friendly

Related Posts