উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পেলেন রবি’র সাত কর্মকর্তা

রবি’র উদ্ভাবনী ডিজিটাল উদ্যোক্তা প্লাটফর্ম ‘আর-ভেঞ্চারস’র কার্যক্রম শুরু

 

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রবি’র আর্থিক সহায়তা, ব্যবস্থাপনাগত পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা নিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে যাত্রা শুরু করলেন কোম্পানির সাত কর্মকর্তা। অপারেটরটির উদ্ভাবনী ডিজিটাল উদ্যোক্তা তৈরির প্লাটফর্ম ‘আর-ভেঞ্চারস’র আওতায় নিজ নিজ ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু করলেন তারা।

আগামী ১২ মাস উদ্যোক্তারা ওই ব্যবসায়িক ধারণাগুলো নিয়ে বাজারে আসার জন্য কাজ করে যাবেন। বাছাইকৃত ৬টি ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রত্যেকটির জন্য ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থায়ন করবে রবি।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আর-ভেঞ্চারস প্রকল্পের আওতায় রবি’র যে কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের জন্য কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর এবং মাইক্রোসফট বাংলাদেশ’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর সোনিয়া বশির কবির।

রবি’র হেড অব হিউম্যান রিসোর্সেস ডিভিশন মো. ফয়সাল ইমতিয়াজ খান’র স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। এসময় রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক ছিলেন রবি’র রিসোর্সিং’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. জাভেদ পারভেজ।

সাফল্যের সাথে ব্যবসা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষে উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা শুরু করবেন; হয়ে উঠবেন নিজের ডিজিটাল ব্যবসার সিইও। দেশের ডিজিটাল স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রে নিজেদের কর্মীদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ এনে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে রবি। টেলিযোগাযোগ শিল্পে ডিজিটাল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য রবি’র অঙ্গীকারের প্রতিফলনও এ উদ্যোগ।

রবি’র ডিজিটাল সার্ভিস’র ম্যানেজার মোহাম্মাদ আব্দুল হাদি ভূঁইয়া, ইনফরমেশন টেকনোলজি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. আশিক নূন, এন্টারপ্রাইজ প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট অফিস’র জেনারেল ম্যানেজার মুহাম্মদ মোহছিযুল হক, মার্কেট অপারেশনস’র জেনারেল ম্যানেজার শাকিল ফারহান মিঠুন, মার্কেট অপারেশনস’র ম্যানেজার মো. হাসিবুল করিম, মার্কেট অপারেশনস’র স্পেশালিষ্ট রিয়াসাত চৌধুরী এবং নেটওয়ার্ক অ্যাসুরেন্স’র জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মাদ মোস্তাফিজুর রহমান- এই সাত কর্মকর্তা এখন থেকে আর-ভেঞ্চারস’র আওতায় আগামী এক বছর তাদের ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাবেন।

এই ১২ মাস নিয়মিত বেতন ভাতাদিসহ সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন উদ্যোক্তারা এবং এসময় রবিতে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্বও পালন করতে হবে না। বরং স্বাধীনভাবে কাজ করে তাদের ব্যবসায়িক ধারণাগুলোকে বাস্তবায়িত করতে প্রতিটি উদ্যেগের জন্য রবি থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থায়ন পাাবেন তারা।

সাতজন উদ্যোক্তার নিজ নিজ কাজের অগ্রগতির ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করবে রবি। সফলতার সাথে এই স্তর শেষ করার পর তারা তাদের ব্যবসা পরিচালনা শুরু করবেন। এইসব কোম্পানিতে রবিও মালিকানার একটি অংশ নেবে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক ধারণা টেকসই হলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত থেকে অর্থায়নের আগ্রহকে স্বাগত জানাবে রবি।

মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমি এমন কোন কোম্পানি দেখিনি যারা নিজেদের কর্মীদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথ তৈরি করে দিচ্ছে। আমি নিজে যখন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য লড়াই করছিলাম তখন যদি রবি’র মতো একটি কোম্পানিকে পাশে পেতাম তাহলে অনেক সহজ হতো। আজকাল অনেকেই ডিজিটাল স্টার্ট-আপ নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি তাদের অনেকেরই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, অর্থ প্রবাহের মতো ব্যবসার মৌলিক দিকগুলো সম্পর্কেও কোন ধারণা নেই। কিন্তু আর-ভেঞ্চারিস্টদের আমার কাছে এদিক থেকে ব্যতিক্রম মনে হয়েছে, তারা একটি পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। রবি’র আর-ভেঞ্চারিস্টদের প্রতি রইল আমার শুভ কামনা। রবি’র এমন মহতি উদ্যোগে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সবসময় পাশে থাকবে।”

রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “ডিজিটাল সমাজের অগ্রগতির সাথে সাথে ডিজিটাল সল্যুশনের জন্য ব্যবসার নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। রবি একটি কাঠামোবদ্ধ কোম্পানি। কিন্তু এ ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন বাজারের চাহিদা বুঝে নতুন উদ্যোক্তা, যারা নিজেদের মতো করে ব্যবসার ধারাটি তৈরি করে নিতে পারবেন। তাই আমরা আর-ভ্যাঞ্চারস প্লাটফর্মটি তৈরি করেছি যাতে এক্ষেত্রে যারা আমাদের চেয়ে উপযুক্ত তারা যেন ডিজিটাল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ পান। প্রথমে আমরা আমাদের কর্মীদের তাদের ধারণাটি বাস্তবায়নের সুযোগ দিচ্ছি; যেহেতু তারা এই ব্যবসার আবহটা ভাল বোঝেন। সাত কর্মকর্তাদের উদ্যোগ নিয়ে তাদের সাথে আমরা একযোগে কাজ করেছি যাতে উদ্যোগগুলো সফল হয় এবং প্রতিটি ব্যবসায়িক ধারণার জন্য এক কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আমরা। আমাদের বিশ্বাস, এ উদ্যোগের ফলে রবিতে আধুনিক, কর্মতৎপর ও ডিজিটাল কাজের সংস্কৃতি আরো সমৃদ্ধ হবে। শিগগিরই দেশের প্রাণবন্ত তরুণদের আর-ভেঞ্চারস প্লাটফর্মের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনাও আছে।”

প্রাথমিকভাবে ২১২টি ব্যবসায়িক ধারণা জমা দিয়েছিলেন রবি’র কর্মকর্তারা। কয়েক ধাপের প্রক্রিয়া শেষে দ্বিতীয় পর্বের জন্য ৫০টি ধারণা বাছাই করা হয়। ৫০টি থেকে সেমিফাইনাল পর্বে যায় ১৫টি ধারণা। এরপর চুড়ান্তভাবে ছয়টি ধারণা বাছাই করা হয়েছে যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য এখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন সংশিষ্ট উদ্যোক্তারা।

Print Friendly

Related Posts