ক্যাপ্টেন কোহলির বিদায় আসন্ন!

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কোহলির দিকেও বার্তা যাচ্ছে। তুমিও অধিনায়ক কিন্তু সেটা আজকে। কাল তোমাকে ইচ্ছা করলেই সরিয়ে দিতে পারি। ভারতের হয়ে সফল অধিনায়কদের ভবিতব্যটা বহুবার এমনই হয়েছে।

হয় অধিনায়ককে দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে, নয়তো অধিনায়ক নিজেই দায়িত্ব ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। টি-২০ ফরম্যাটে রোহিতের উপর টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। দেখাচ্ছে, বিকল্প তৈরি।

ভারতের হাতে ক্যাপ্টেন থেকে উইকেটকিপার। ভুরি ভুরি বিকল্প। ‘নেক্সট’ ভাবতে গিয়ে কোথাও যেন আবারও ফিরছে সেই পুরনো ধারা। শুধু একটু অন্যরকম ভাবে। বর্তমান যেন হঠাৎ করেই ‘এক্স’ হতে পারেন, এমন সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে কোহলিকে বিশ্রাম দিয়ে রোহিতকে দায়িত্ব দেওয়া সেই জল্পনায় উস্কানি দিচ্ছে।

কপিল দেব, ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। ১৯৮৩-তে বিশ্বকাপ জয়ের ঠিক পরের বছর ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ড খেলতে ভারতে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসে। চতুর্থ টেস্টে দল থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল কপিলকে।

এখনও ক্রিকেটমহলে কান পাতলে শোনা যায় কিভাবে মুম্বইয়া ক্রিকেট রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন হরিয়ানা হ্যারিকেন। যদিও ১৯৮৭- বিশ্বকাপেও দলকে নেতৃত্ব দেন কপিল। পড়ে আবারও অধিনায়কের পদ থেকে ছাঁটাই। ১৯৮৯-এ দলের সহ অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় কপিলকে।

সচিন তেন্ডুলকর, দ্বিতীয়বার বেলতলায় গিয়ে বুঝে গিয়েছিলেন , তিনি যে টিম চাইছেন তিনি তা পাচ্ছেন না। তাঁর বায়োপিকে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার অধিনায়ক হওয়াতে আজহারউদ্দিনের মতো বেশ কিছু ক্রিকেটার যথেষ্ট ক্ষুব্ধ ছিলেন।

অধিনায়কত্বের কাঁটার মুকুট তাঁর ব্যাটিংয়েও পড়তে শুরু করেছিল। ২০০০ সালে দায়িত্ব ছেড়ে দেন সচিন। সচিনের অধিনায়কত্বে ভারতের চরম গ্লানির হার শিকারের সেই শেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে দলে ছিলেন এমএসকে প্রসাদের মতো চরম খারাপ ক্রিকেটার যিনি আজকের নির্বাচক কমিটির প্রধান।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দল থেকে অপসারণের পদ্ধতি নিয়ে আজও বিতর্ক চলে। রাহুল দ্রাবিড়কে দল থেকে বাদ পড়তে হয়নি। তবে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ২০০৭ বিশ্বকাপে টিম কম্বিনেশনে কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের চরম ভুল সিদ্ধান্ত। ভারতের লজ্জার হার। সেই দুঃস্বপ্ন এখনও হয়তো রাহুল দ্রাবিড়ের রাতের ঘুম নষ্ট করতে পারে। অধিনায়কত্ব ছেড়েছিলেন রাহুল।

মহেন্দ্র সিংহ ধোনি দেশকে দিয়েছেন টি-২০ বিশ্বকাপ, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০১৪ সালে ঘরে বাইরে ভারতের চরম খারাপ পারফরম্যান্স। সংবাদমাধ্যমের চাপ। সফরের মাঝেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নিলেন দেশের সফলতম অধিনায়ক। পড়ে ২০১৬ সালে ছোট ফরম্যাট থেকেও দায়িত্ব ছাড়েন এমএস।

এবার সামনে বিরাট কোহলি। ইংল্যান্ড সফরে ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক সফল। কিন্তু দলের হতাশাজনক পারফর্মেন্স। এশিয়া কাপে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হল। ফুল টাইম দায়িত্ব পেয়েই রোহিত চ্যাম্পিয়ন করলেন ভারতকে সঙ্গে নিজেরও দুরন্ত পারফর্মেন্স। তখনই ক্রিকেটমহলে গুঞ্জন শুরু হয় তাহলে ছোট ফরম্যাটে কি তবে বিরাট ডেপুটি কি তাঁর অধিনায়কের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন।

জল্পনা সত্যি। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টি-২০ দলের দায়িত্ব আবারও রোহিতের উপর। নিদাহস ট্রফি থেকেই সেই বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়িয়েছিলেন হিটম্যান। এবার বিরাটের উপর থেকে চাপ কমানোর আড়ালে কোথাও না কোথাও বিরাটের অধিনায়কত্বের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে তা বলা যেতেই পারে।

ভারতীয় ক্রিকেট দলের আগের অধিনায়ক তথা কিংবদন্তিদের সঙ্গে যা হয়েছে তা সত্যিই নিকৃষ্টমানের ছিল এবং তা চোখে লাগার মতো। কিন্তু বিসিসিআই এখন কর্পোরেট হয়েছে। কর্পোরেট স্টাইলেই যেন পড়ছে বিরাট চাপ।

কলকাতা২৪

Print Friendly

Related Posts