গিয়েছিলেন শঙ্কা নিয়ে, ফিরলেন হাসিমুখে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥  তাকে নিয়ে কত শঙ্কা, কত গুজব। সাকিবের সুস্থ হতে নাকি বেশ সময় লাগবে, এমনকি তার ‘বিশ্বকাপ অনিশ্চিত’- এমন খবরও চাউর হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে সব খবর ছিল অতিরঞ্জিত।

যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, চেহারায় ছিল শঙ্কার ছায়া। কণ্ঠে ছিল সংশয় ও উৎকণ্ঠা। ফেরার সময় সেই সাকিব আল হাসানের মুখেই হাসি। দেশে ফিরেই শোনালেন আশার কথা। আঙুলে শক্তি ফিরলে মাঠে ফিরতে পারেন আগামী মাসেও।

সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বাঁ হাতের কনিষ্ঠা আঙুল প্রায় হারাতে বসেছিলেন সাকিব। তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ছোট একটি অস্ত্রোপচারে সে যাত্রা পার পেয়েছিলেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় নিয়েছেন উন্নত চিকিৎসা। ফলে সংক্রমণ পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। দেশে ফিরে এমনটাই জানিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। তবে এখনও আঙুলে পূর্ণ শক্তি ফিরে আসেনি। শক্তি ফেরাতে এর মধ্যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় নেমে পড়েছেন তিনি।

গতকাল বেলা ১১.৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন সাকিব। এরপর আঙুলের সর্বশেষ পরিস্থিতির কথা জানান এ অলরাউন্ডার, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করে জানতে হবে ব্যথা আবার বাড়ল বা অন্য কোনো সমস্যা হলো কিনা। তবে এখন পর্যন্ত সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণেই আছে।’

এশিয়া কাপ শেষেই আঙুলের অস্ত্রোপচার করাতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে পরবর্তীতে এশিয়া কাপ খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মূলত ফিজিও কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আসরের মাঝপথে আঙুলের ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সে অস্ত্রোপচার আর করা হয়নি তার। খুব শিগগিরই করারও সম্ভাবনা নেই। তবে অস্ত্রোপচার ছাড়া পুনর্বাসনের মাধ্যমে খেলায় ফিরে আসার কথা ভাবছেন দেশ সেরা এ অলরাউন্ডার, ‘অস্ত্রোপচার ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। কিন্তু ভালো দিক হচ্ছে অস্ত্রোপচার না করেও হয়তো খেলা সম্ভব হতে পারে। আমি বলেন আর ফিজিওর পরামর্শে বলেন, ওই দিকটা চিন্তা করা হচ্ছে যে অস্ত্রোপচার বাদে কিভাবে খেলা যায়।’

তবে ঠিক কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তা ঠিকভাবে বলতে পারছেন না সাকিব। আপাতত আঙুলে শক্তি ফিরে পাওয়ার মিশনে নামবেন এ অলরাউন্ডার, ‘এর (মাঠে ফেরা) আসলে কোনো সময় বাঁধা নাই। হতে পারে যে সামনের মাসেও খেলতে পারি। এখন আমার হাতে ব্যথা নেই। খুব ভালো অনুভব করছি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার হাতের শক্তি কতক্ষণে ফিরে আসে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে তাহলে সামনের মাসেও খেলতে পারি। আবার পুনর্বাসনের পর যদি ব্যথা অনুভব করি তাহলে আবার অপেক্ষা করতে হবে যে কখন অস্ত্রোপচার করতে পারব। এটা আসলে খুব অনিশ্চিত। তারপরও যেহেতু (আঙুলে) শক্তি আসার ব্যাপার আছে, একমাসে হয়তো হবে না। একটু সময় বেশিই লাগবে।’

বসে নেই সাকিব। দেশে ফেরার আগেই শুরু করে দিয়েছেন ফেরার প্রক্রিয়া। এর মধ্যেই পুনর্বাসন শুরু করে দিয়েছেন থেরাপিস্ট দেখিয়ে। দ্রুতই আঙুলে শক্তি ফিরে পেতে চান এ অলরাউন্ডার, ‘আমি এর মধ্যেই শুরু করে দিয়েছি। ওখানে থাকতেই শুরু করেছি। ওখানে হাতের থেরাপিস্টকে দেখানো হয়েছে। উনি যেভাবে বলেছেন, সেভাবে কাজ করতে হবে। যত বেশি করা যাবে ততো আমার জন্য ভালো। যত বেশি সম্ভব আঙুলে শক্তি আনা, সেটাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য।’

সাকিব দ্রুত মাঠে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সেটা এবার চাইছে না বোর্ড। আগামী আড়াই থেকে তিন মাস তার মাঠের বাইরে থাকা প্রায় নিশ্চিত। এরপর ব্যথা কমে গেলে খেলতে পারবেন কোনো বিঘ্ব ছাড়াই। তবে ব্যথা করলে আবার আশ্রয় নিতে হবে সার্জনের। ব্যথা কমে গেলেও সাকিবকে খেলতে দিতে নারাজ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সেটা সাকিবের ভালো জন্যেই। আর সিামনে বিশ্বকাপের চিন্তা তো আছেই।

বোর্ড সভাপতি পাপন বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যখন সন্দেহ এসেছে যে এশিয়া কাপ খেলার কারণে তার এমন হয়েছে, তাহলে এখন কোনো সিরিজ-টুর্নামেন্টে খেলার দরকার নেই। বিপিএল-আইপিএলের চেয়ে এশিয়া কাপ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়া কাপের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপ। আমরা চাই বিশ্বকাপটা সে পুরোপুরি ফিট হয়ে খেলুক।’

Print Friendly

Related Posts