গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড নারীদের উৎসর্গ প্রধানমন্ত্রীর

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে পাওয়া সম্মানজনক ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ নারীদের উৎসর্গ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী সম্মাননাটি নারীদের উৎসর্গ করেন। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া সফর সম্পর্কে জানাতেই গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

‘গ্লোবাল সামিট অব উইমেন সম্মেলনে’ যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে গত শুক্রবার ভোরে সিডনি পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের প্রথম দিনেই প্রধানমন্ত্রী সিডনি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (আইসিসি) ‘গ্লোবাল উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ গ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘গ্লোবাল সামিট অব উইমেন’ বাংলাদেশে নারী শিক্ষা এবং নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই সম্মাননায় ভূষিত করে।

 

সড়কে নিয়ম পথচারীদেরও মানতে হবে

 

দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদেরও সড়কের নিয়মগুলো মানার উপর জোর দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যমের সহায়তাও চেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি আসে। শেখ হাসিনা ঢাকায় ট্রাফিক আইন না মেনে পথচারীদের পারাপারের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, “আমার এই কথাগুলো অনেকে পছন্দ করবেন না, কিন্তু যা বাস্তব , তাই বলছি।

রাস্তায় চলার নিয়ম আছে, সেটা আমরা কতটা মানি? একটা গাড়ি দ্রুতগতিতে আসছে, আমরা হাত একটা তুলে রাস্তায় নেমে গেলাম. যারা পথচারী, তাদেরও কিছু রুলস জানা দরকার, মানা দরকার। শেখ হাসিনা বলেন, “আপনি বাসে চড়ে যাচ্ছেন, কেন আপনি হাত বাইর করে যাবেন? আপনারা (সাংবাদিক) যার হাত গেল, তার জন্য কান্নাকাটি করছেন; কিন্তু সে যে নিয়ম মানছে না, সে কথা তো বলছেন না।”

হেলমেট ছাড়া মোটর সাইকেলে এবং সিটবেল্ট না বেঁধে গাড়িতে চড়াও দুর্ঘটনায় গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। সড়ক পারাপারে পথচারীদের আইন মানার সচেতনতা তৈরিতে বেসরকারি গণমাধ্যমগুলোকেও প্রচারের চালানোর আহ্বান জানান তিনি।

কোটা নাই, আলোচনার আর কী আছে

 

সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ নিয়ে আর আলোচনারও কিছু নেই। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা কোটা চায় না, তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। এখন আর আলোচনার কী আছে? সরকারি চাকরিতে কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে শিার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের কথা বলেন। কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলে সঙ্গে সঙ্গে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়ে আসছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, তবে প্রজ্ঞাপন না পেয়ে হতাশ আন্দোলনকারীরা।

এরপর গত ২৭ এপ্রিল আন্দোলনকারী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মতাসীন দলের নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার ঘোষণা কীভাবে কার্যকরে ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে’ প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

বিদেশ সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা প্রধানমন্ত্রী চাকরিতে বিভিন্ন কোটা রাখার গুরুত্ব তুলে ধরার পর বলেন, কোটা না চাইলে আর থাকবে না। কোটা সংস্কারের আন্দোলনের পেছনে কারা রয়েছে, তাদের পরিচয় খুঁজে বের করতে বলেন শেখ হাসিনা। আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে ব্যঙ্গ করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা আমার পে সম্ভব না। এখন জেলা কোটা না থাকলে আন্দোলনকারীদের কেউ পরে চাকরি না পেয়ে তা চাইলে তা পাবেন না বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। আন্দোলনে যারা যারা আছে, তাদের ছবি সংরক্ষণ করা আছে, তখন যদি কান্নাকাটি করে, তখন দেখা যাবে।

 

তারেককে ফিরিয়ে আনতে যা করতে হয় করবো

 

লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আইনি পদক্ষেপসহ যা যা করা দরকার সরকার তা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারেক রহমান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দুই দ্ইুটা মামলায় সে সাজাপ্রাপ্ত। আরও মামলা রয়েছে। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবার লন্ডনে বসে আন্দোলন করে তার মায়ের মুক্তির জন্য, যে কি-না আরেক সাজাপ্রাপ্ত আসামি।’

তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটা দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে গেলে তাকে কিন্তু পাসপোর্ট জমা দিতে হয়। এছাড়া সে যে দেশের পাসপোর্টধারী সে দেশে যেতেও পারে না, কেননা ওই দেশে গেলে তার রাজনৈতিক আশ্রয় বাতিল হয়ে যায়। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি নিজেদের বলে সবচেয়ে বড় দল, সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। তো তারা কী এত বড় দলে একটা মানুষ পেল না নেতৃত্বের জন্য। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করে বসে আছে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের একজন অপরাধীকে দেশে ধরে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা আমাদের থাকবে। ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে, আলোচনা হচ্ছে। যেভাবে আইনে আছে, যা যা করতে হয় আমরা করবো।

 

Print Friendly

Related Posts