দীপ্তও নেই, চার বন্ধুই চলে গেলেন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ময়মনসিংহের ভালুকায় বিস্ফোরণে চার বন্ধুই মারা গেলেন। সর্বশেষ দীপ্ত সরকারও (২৩) মারা গেছেন। দীপ্তর শরীরের প্রায় ৫৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট সূত্র। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ওই ঘটনায় চিকিৎসাধীন তিন শিক্ষার্থীর সবাই মারা গেলেন। আর ঘটনা স্থলেই একজন মারা যান। সব মিলে চারজনই মারা গেলেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ হাফিজুর রহমানও (২৪) না ফেরার দেশে চলে গেছেন। নিহত হাফিজ নওগাঁ জেলার বিল্লাল হোসেনের ছেলে। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিট সূত্র জানায়, হাফিজের শ্বাসনালিসহ শরীরের ৫৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।এর আগে বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহীন মিয়া (২৪)

গত শনিবার রাতে ভালুকার মাস্টারবাড়ি এলাকায় একটি ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্যাটে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তৌহিদুল ইসলাম তপু (২৩) নামের একজন মারা যান। গুরুতর দগ্ধ হন দীপ্ত সরকার (২৩), শাহীন মিয়া (২৪) ও হাফিজুর রহমান। তাঁরা সবাই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বস্ত্র প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।
শিাজীবন শেষে কর্মজীবনে ঢোকার আগে হাতে-কলমে শিা নিতে এই চার শিক্ষার্থী ভালুকার স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানায় শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কারখানার পাশে মাস্টারবাড়ি এলাকায় তাঁরা ফ্যাট ভাড়া নেন। গত ১০ মার্চ ওই বাসা এক মাসের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন তারা।

নিহত এই চার শিার্থীর সবাই বিভাগে মেধাতালিকায় প্রথম দিকে ছিলেন। তাঁদের সহপাঠী তুষার মাহমুদ জানান, সম্মিলিত ফলাফলে দীপ্ত দ্বিতীয়, তৌহিদ ছিল তৃতীয় ও শাহীনের অবস্থান ছিল চতুর্থ স্থানে। স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই চার শিার্থী ১১ মার্চ থেকে ইন্টার্নি শুরু করেন, যা আগামী ৫ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা।

বিস্ফোরণের পর দীপ্ত, শাহীন ও হাফিজুরকে গত রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার পর পুলিশ জানায়, মাস্টারবাড়ি এলাকার বাড়িটির মালিক অবৈধভাবে গ্যাস-সংযোগ নিয়েছিলেন। সেই সংযোগের ফুটো থেকে গ্যাস ছড়িয়ে বিস্ফোরণ ঘটেছে। ভবনমালিকের অবহেলায় হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভালুকা থানার পুলিশ। বিস্ফোরণের পর রোববার সন্ধ্যায় ছয়তলা ওই ভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয় পুলিশ। ভবনের অন্য ভাড়াটেরা আগেই ভবন ছেড়েছেন।

Print Friendly

Related Posts