ছুটির দিনে রাজধানীতে এক শেয়াল নিয়ে তুলকালাম

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ছুটির দিন, ভোরের আলো ফোটেনি তখনো। রাজধানীর উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কের পরিবেশ তখন বেশ শান্ত। পাশের ফাঁকা জায়গা থেকে আচমকা দৌড়ে এল একটি প্রাণী। ওই সড়কের ৮১ নম্বর বাড়ির গেট দিয়ে দ্রুত ঢুকে পড়ল। ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় থাকা তত্ত্বাবধায়ক ঘটনাটি বুঝে উঠতে পারলেন না। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীর ঘরে নড়াচড়া করার শব্দ পাওয়া গেল। মো. রহমান নামে নিরাপত্তারক্ষী কক্ষটির ভেতরে দেখেন একটি শেয়াল ছুটোছুটি করছে। শেয়ালটির মেজাজ তখন বেশ গরম।

লোকজন দেখে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। সেই কক্ষ থেকে শিয়ালটি চলে যায় সিঁড়ির নিচে পানির পাম্পের কক্ষে। আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন পুরো ভবনের লোকজন। নানা উপায়ে বের করার চেষ্টা চলে শেয়ালকে। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ। শেয়ালের মেজাজ দেখে বাড়িটির লোকজনও ছুটোছুটি করতে থাকেন। প্রায় ঘণ্টা চারেক সময় চলে যায়। কিছুতেই শেয়াল বাড়ি ছাড়ছে না। উপায় না দেখে ৯৯৯ নম্বর ফোন করেন বাড়ির মালিক মো. জাভেদ আলী। সেখান থেকে খবর চলে যায় উত্তরা ফায়ার স্টেশনে।

সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. সফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে উত্তরা ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা পৌনে ১১টার দিকে শেয়াল ধরার কাজ শুরু করেন। বাড়ির মালিক জাভেদ আলী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এসে প্রথম পরিকল্পনা করেন শেয়ালটিকে বের করার। বেশ কিছু সময় তাঁরা চেষ্টাও চালাচ্ছিলেন। কিন্তু শেয়াল ধরা দিচ্ছিল না। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর শেয়াল ধরা পড়ে।

উত্তরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তুরাগ নদের তীরে মানুষজন কম বলে সেখানে শেয়ালের বাস। শেয়ালটি খাবারের খোঁজে বাড়িটিতে ঢুকে থাকতে পারে। আর তা না হলে শিকারের পেছনে ছুটতে গিয়ে পথ হারিয়ে ওই বাড়িতে ঢুকে যেতে পারে। তবে আমরা ওকে ধরতে বেশ সাবধানে কাজ করি। মাথায় হেলমেট ও হাতে গ্লাভস পরে শেয়াল ধরার অভিযান শুরু করি। বেশ ক্ষিপ্ত ছিল প্রাণীটি। তবে ঠিক করি শিয়ালকে জীবিত ধরতে হবে। পানির পাম্পের কক্ষের একটি কোনায় চলে যাওয়ার পর শিয়ালটি ধরা পড়ে।’

মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, শেয়ালটি বড় বেশ। লম্বায় প্রায় তিন ফুট। পরে ওই শেয়ালটিকে দুই কিলোমিটার দূরে ১৮ নম্বর সেক্টরের উন্মুক্ত স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Print Friendly

Related Posts