জাবিতে বকেয়ার চাপে ক্যান্টিন বন্ধ

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বকেয়া টাকা আদায় না হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে একই হলের দুইটি ক্যান্টিন। এতে চরম খাদ্য সংকটে পরেছে ওই হলের প্রায় দেড় হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী।

জানা যায়, কিছু শিক্ষার্থী ঠিকমতো খাবারের দাম ও বকেয়া পরিশোধ না করায় ক্যান্টিন মালিকরা তাদের লস হচ্ছে বলে জানিয়ে আসছিলেন। হল প্রশাসনের তদারকি না করা ও দীর্ঘদিন লসে থাকায় অবশেষে ক্যান্টিন বন্ধ করে দিয়েছে মালিকরা। প্রশাসনকে এ বিষয়ে একাধিকবার জানিয়ে ক্যান্টিন মালিকরা সুফল পাননি বলে এ পর্যন্ত কয়েক দফা কোনো ঘোষণা ছাড়াই ক্যান্টিন বন্ধ করে রেখেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

হলের খাবার না পেয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য বাধ্য হয়ে বটতলা যেতে হয়। এতে বাড়তি খরচের পাশাপাশি যাতায়াত সমস্যা পোহাতে হয় তাঁদের। বিশেষ করে রাত নয়টার পরে হল থেকে বটতলা যাওয়া-আসায় রিক্সা পাওয়া যায় না। ফলে পায়ে হেটে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীদের দাবি, হলে খাদ্য সংকটের কারণে পড়ালেখায় ব্যাঘাত হচ্ছে।

ইমরান নামে এক শিক্ষার্থী জানান, ‘হঠাৎ করে ক্যান্টিন বন্ধ করে দিলে শিক্ষার্থীদের বেশি ভোগান্তি হয়। বাইরে থেকে না খেয়ে এসে হলেও খাবার পায় না। অনেক সময় ক্যান্টিন খোলা থাকলেও খাবার থাকে না। দেখা যায় টিউশন থেকে এসে প্রায় দিনই হলে খাবার পাওয়া যায় না।’
এছাড়া ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সীমাহীন দাম রাখা সহ বিভিন্ন অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের। খাবারের দাম-মান নিয়ন্ত্রন করে অতি দ্রুত হলের ডাইনিং-ক্যান্টিন চালু করার দাবি শিক্ষার্থীদের।

বিনা ঘোষণায় ক্যান্টিন বন্ধ করে রাখার কারণ জানতে চাইলে ক্যান্টিন মালিক নুরুন্নবী জানান, ‘কিছু ছাত্র ঠিকমতো টাকা দেয় না। মুখে মুখে হিসাব রেখে পরে টাকা পরিশোধ করে না।’

এছাড়া পণ্যের বাজারদর বেশি থাকা ও বকেয়া আদায় না হওয়ায় কয়েক হাজার টাকা লোকসানে আছেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মো. তারেক জানান, ‘মেস গুলোর কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনে কম খায়। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত না খেলে ক্যান্টিন মালিকদের লাভ হয় না। তাই বারবার সমস্যা হয়।’
তছাড়া ক্যান্টিনে খাবারের মানোন্নয়ন ও নিয়মিত খাবার সরবরাহের ব্যাপারে ক্যান্টিন মালিকদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন বলেও তিনি জানান।

এদিকে বিশ^বিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে দীর্ঘদিন যাবৎ ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। হল শাখা ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের চাপে গত বছর কয়েক মাস ডাইনিং খোলা রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ডাইনিংয়ে বেশি শিক্ষার্থী খায় না অভিযোগ এনে পুনরায় বন্ধ করে দেয় হল প্রশাসন। বছরের পর বছর হলের ডাইনিং বন্ধ থাকায় ডাইনিং রুমে চালু হয়েছে শিক্ষার্থীদের মেস। এতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পরিচালনায় খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থী ও মেসে ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাবারের একমাত্র ভরসা ক্যান্টিন।

Print Friendly

Related Posts