তিন বোনের এক স্বামী!

সাভার প্রতিনিধি: সাভারের এক নরসুন্দর (নাপিত) যুবক একে একে আপন তিন বোনকে বিয়ে করে হইচই ফেলে দিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

মাত্র সাড়ে চার বছরের মধ্যে নরসুন্দর সোহরাব সরদার (৩২) আপন তিন বোনকে বিয়ে করে পৃথকভাবে সংসার পেতেছেন তিন জনের সঙ্গেই। তবে তৃতীয় বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ পেতেই সালিশ ডাকিয়েছেন দ্বিতীয় স্ত্রী।

সাভারের তেতুলঝোড়া ইউনিয়নের মুসলিম পাড়ায় বাংলাদেশ ট্রাক চালক ইউনিয়নের হেমায়েতপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেনের কার্যালয়ে শুক্রবার রাতে এই সালিশ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে সুমন হোসেন, নরসুন্দর সোহরাব সরদারের বাড়িওয়ালা রাজা মিয়া, স্থানীয় মুরব্বি আবদুল আলীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সালিশ সূত্রে জানা যায়, নরসুন্দর সোহরাব খুলনা জেলার কয়রা থানার বাগমারা এলাকার জনৈক আব্দুর রহমান সরদারের ছেলে।

যে তিন বোনকে একে একে বিয়ে করেছেন সোহরাব, তারা বরিশাল জেলার কোতয়ালী থানার চরাইচা গ্রামের মেয়ে। সোহরাব প্রথম বিয়ে করেন তিন বোনের মেঝো বোনকে সাড়ে ৪ বছর আগে। পারিবারিকভাবে ওই বিয়েটা হয়েছিল খুলনাতে। ওই সময় বরিশাল ছেড়ে খুলনাতে বসবাস করতো মেয়ের পরিবার।

বিয়ের এক বছরের মাথায় প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তার অবিবাহিত বড় বোনকে (২৩) বিয়ে করেন সোহরাব। খুলনা থেকে পালিয়ে সাভারের তেতুলঝোড়া ইউনিয়নের মুসলিম পাড়া এলাকায় এসে সংসার পাতেন। এখানে দুজনের সংসার গড়িয়েছে তিন বছরে।

গত ৩ জানুয়ারি সোহবার আবারও তার ছোট শ্যালিকাকে (১৮) বিয়ে করেন। সে মাত্র তিন মাস আগে পোশাক কারখানায় কাজ নিতে বড় বোনের বাসায় আসে। বড় বোন নিজেও স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। একই কারখানাতে ছোট বোনকেও কাজ পাইয়ে দেন। চাকরি পেয়ে বোন-দুলাভাইয়ের সঙ্গে একই বাসাতে থাকতেন ছোট বোন।

সম্প্রতি ছোট বোন অসুস্থ হয়ে পড়লে তার প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে। তারপরই দুলা ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে ছোট বোন। বড় বোন রাতের পালায় কাজে থাকলেই ঘনিষ্ঠ হতেন দুলাভাই। প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ার তিনদিনের মাথায় শ্যালিকাকে বিয়ে করে নেয় সোহরাব।

ক্ষোভ ও অভিমানে বড় বোনের বক্তব্য, ‘সোহরাব আমার দুই ছোট বোন এবং আমার সঙ্গে একই প্রতারনা করেছে। তাই ওর সংসার আমি আর করতে চাই না। ওরা সুখে থাকুক।’

বাংলাদেশ ট্রাক চালক ইউনিয়নের হেমায়েতপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমন হোসেন জানান, বিষয়টি আপন বোনদের মধ্যে হওয়ায় শক্ত বিচার করতে পারেননি গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তাদের সময় দিয়ে নিজেদের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করতে বলা হয়েছে।

সোহরাবের বক্তব্য, ‘প্রথম স্ত্রী নিজেই আমাকে ছেড়ে যান। এরপর তার বড় বোন নিজেই আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু তিন বছরের সংসার জীবনে আমরা নি:সন্তান থাকি। তাই তাদের ছোট বোনকে বিয়ে করতে বাধ্য হই আমি।’

এদিকে আজ শনিবার সকালে এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, সোহরাব শেষ স্ত্রীকে নিয়ে এলাকা ছেড়েছে। তবে বড় বোন এ এলাকাতেই রয়েছেন।

Print Friendly

Related Posts