নতুন সরকারের ‘অভিনব সংজ্ঞা’ রুহুল কবির রিজভীর

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নবনির্বাচিত সরকারের ‘অভিনব সংজ্ঞা’ দিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কাযালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর অভিনব পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে নতুন গভর্নমেন্ট তৈরি হচ্ছে তা হবে ‘গভর্নমেন্ট অব দ্য বিজিবি বাই দ্য র‌্যাব এবং ফর দ্য পুলিশ’।

রিজভী বলেন, এই মহা ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে এরা ক্রমান্বয়ে উপহাস করছে। আওয়ামী লীগ নেতারা এখন গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের চাপাবাজি ও গলাবাজির জোরে ভোট নিয়ে মহা-জালিয়াতির ঘটনা আড়াল করতে চাচ্ছে, কিন্তু দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে চোখে কিছুই এড়িয়ে যায়নি। ৩০ শে ডিসেম্বরের নির্বাচন ১৯৭৩ সালের খারাপ নির্বাচনের চাইতেও কুৎসিত।

বিএনপির নেতা বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাত কালো রাত, ৩০ শে ডিসেম্বর দিন অন্ধকার দিন। ২৯ শে ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মানবশূন্য কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির নির্বোধ উল্লাসে মেতে উঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা। ৩০ শে ডিসেম্বর ভোটের দিন গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নের ওপর ধেয়ে এলো মহাদূর্যোগ।

‘‘ভোটের দিন বিশ্ববাসী মহাশঙ্কা নিয়ে দেখল বিজিবি-র‌্যাব-পুলিশকর্তৃক দেশের জণগনের আত্মমর্যাদাবোধে অসম্মানের দৃশ্যটি। তারা দেখল ভোটাধিকার বঞ্চনার শেষ দৃশ্যটি। রাতের আধাঁরে কেন্দ্রে-কেন্দ্রে অকটেন ও ডিজেল পোড়া ধোঁয়া। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা, ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ঢোকানো। এই সংবাদ নির্বাচনের আগের রাত ১১ টায় আমি আপনাদের ব্রিফিং করে জানিয়েছিলাম।’’

তার অভিযোগ, মিথ্যা জয়ের জন্য ভোট জালিয়াতি করতে পানির মতো টাকা খরচ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেছনে। তারাই একতরফা নির্বাচনের মূখ্য উপাদান হিসাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে আর গণতন্ত্রের গৌরবোজ্জল যুগ সৃষ্টি হলোনা। শেখ হাসিনার দল মানুষের ভোটে জিতেনি, তার দল জিতেছে গায়েবী ভোটে।

৩০ শে ডিসেম্বর নির্বাচনের পর দেশ আরও একধাপ তমাসাচ্ছন্ন বর্বর যুগে প্রবেশ করলো মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনের নামে নিষ্ঠুর রসিকতা করে এখন জনপদের পর জনপদে ধানের শীষের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপর চলছে পৈশাচিক বর্বরতা। মূর্খের অহংকারে আক্রমণ করে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে নিরীহ মানুষের বাড়ি-ঘর-দোকানপাট-বাজার। সবচেয়ে মর্মস্পর্শি শ্বাসরোধী ঘটনা ঘটেছে নোয়াখালীতে এক সিএনজি চালকের স্ত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে শ্লীলতাহানী করা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ১০/১২ জনের এক দল কর্মী নোয়াখালীর সুবর্ণচর এলাকার মধ্যব্যাগারে ৪ সন্তানের মা সিএনজি চালকের স্ত্রীকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে বলে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে মহিলাটি সবার সামনে ধানের শীষে সিল দেয়। এরপর রাত ১০ টার দিকে সন্ত্রাসীরা পুলিশ পরিচয়ে বাড়ীতে ঢুকে গৃহবধুটির হাত-পা ও মুখ বেঁধে রাতভর নির্যাতন করে ঘরের পাশে ফেলে যায়।

তিনি এই পাশবিক নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান।

রিজভী আরো বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ অতীতে কখনো ক্ষমতায় আসেনি। স্বাধীনতার পর থেকে জনগণের ভোটে কখনও আওয়ামীলীগ নির্বাচিত হয়নি। এবারও আওয়ামী লীগের কোন সদস্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়নি, বরং প্রত্যেক এলাকার উপজেলার ইউএনও, থানার ওসি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts