নেপালের বাণিজ্য মেলায় প্রশংসিত ওয়ালটন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নেপালের রাজধানী কাঠমুন্ডুতে অনুষ্ঠিত ‘৪র্থ বাংলাদেশ এক্সপো-২০১৮’ তে ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ওয়ালটন পণ্য। বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এই বাণিজ্য মেলায় ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, আইসিটি এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্সস পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করে ওয়ালটন। এতে ওয়ালটন পণ্য নেপালি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এই মেলায় প্রথমবারের মতো বিক্রি হয় বাংলাদেশে তৈরি মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ।

নেপালে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে গত চার বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ দূতাবাস। ২৩ থেকে ২৭ ফেব্রæয়ারি কাঠমুন্ডুর ভ্রিকুটিমন্ডপ এক্সিবিশন হলে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশি পণ্যের একক ওই বাণিজ্য মেলা। এতে আইসিটি, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, বিল্ডিং নির্মাণ সামগ্রী, রেডিমেইড গার্মেন্ট, সিরামিক, কনজ্যুমার প্রোডাক্ট, ফুড প্রোডাক্ট, চামড়াজাত পণ্যের ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। ইভেন্টের কো-স্পন্সর ছিল ওয়ালটনের নেপাল ডিস্ট্রিবিউটর।

মেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস। উদ্বোধনের পর তারা ওয়ালটন স্টল পরিদর্শন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, নেপালে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যবহার আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে এবং বাংলাদেশি পণ্যের গুণগত উচ্চমান সম্পর্কে নেপালীরা অবগত। বাংলাদেশে তৈরি পণ্য আরো জনপ্রিয় করবে এই মেলা। এর ফলে বাংলাদেশের উদ্যেক্তারা সহজেই সম্ভাবনাময় নেপালের বাজার ধরতে সক্ষম হবেন।

প্রতি বছর এই মেলায় অংশ নিয়ে আসছে ওয়ালটন। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মতো নেপালের এই এক্সপোতে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ব্যাপক ভিড় ছিল। এখানে প্রদর্শিত হয় ওয়ালটনের ব্যাপক বিদ্যুত সাশ্রয়ী ইনভার্টার টেকনোলজির রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, ইনভার্টার এসি, রিচার্জেবল ফ্যান, সিলিং ফ্যান, রাইসকুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাস স্টোভ, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, ইন্ডাকশন কুকার, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারিসহ বিভিন্ন হোম ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লয়েন্সেস। এছাড়া ছিল বিশ্বের লেটেস্ট প্রযুক্তিতে ওয়ালটন কারখানায় তৈরি কম্প্রেসর, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার।

Walton-in-Bangladesh-Expo-N
ছবিতে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নেপালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস এবং নেপালে ওয়ালটনের সোল ডিস্ট্রিবিউটর রিডা ইনকরপোরেটেড প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরফরাজ আনসারি।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে ব্যাপক আকারে নেপালের বাজারে প্রবেশ করে ওয়ালটন। নেপালে নিয়োজিত ওয়ালটনের সোল ডিস্ট্রিবিউটর রিডা ইনকরপোরেটেড প্রাইভেট লিমিটেড। বর্তমানে নেপালে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য হোম অ্যাপ্লায়েন্সস।

রিডার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সরফরাজ আনসারি জানান, মেলায় ওয়ালটন পণ্যের বিশেষ দিক তুলে ধরা হয়। ভিডিও স্ক্রিনে ওয়ালটনের বিজ্ঞাপন, ডকুমেন্টারি ও বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হয়। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া দেখে মুগ্ধ হন।

তিনি আরো জানান, দুই শতাধিক এজেন্টের মাধ্যমে নেপালে ওয়ালটন পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কাঠমুন্ডুর নিউ বানেশ্বর রোডে রয়েছে ওয়ালটনের বিশাল শোরুম।

ফেডারেশন অব নেপাল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফএনসিসিআই)-এর ভাইস চেয়ারম্যান চন্দ্র প্রসাদ দখল বলেন, দীর্ঘ সময় ধরেই নেপালের বাজারে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটন ব্যবসা করছে। পণ্যের গুণগত মানের কারণে খুুব কম সময়ে এই ব্র্যান্ডটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সামনের দিনগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি আরো ভালো করবে।

নেপালের ব্যবসায়ী তারারাত্নে স্থাপিত বলেন, এখানে ওয়ালটন একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। গুণগতমান সম্পন্ন হওয়ায় ব্র্যান্ডটি ক্রেতাদের আস্থার জায়গায় পৌঁছে গেছে। মেলায় ওয়ালটন নতুন নতুন ডিজাইন ও মডেলের পণ্য নিয়ে এসেছে। যা নেপালি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের মাঝে ভালো সাড়া ফেলেছে।

ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যেই নেপালের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিজেদের করে নিয়েছে ওয়ালটন। এবার ওয়ালটনের টার্গেট- বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মতো নেপালের বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা।

ওয়ালটনের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, সেরা মানের পণ্য নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশ নিচ্ছেন তারা। তিনি বলেন, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ঘটিয়ে উচ্চমানের পণ্য দিয়ে বিশ্বের যে কোনো ব্র্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে ওয়ালটন। নেপালে ইতোমধ্যেই ওয়ালটন পণ্যের বিশাল বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত পণ্য নেপালি ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ফলে নেপালি ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হচ্ছে।

 

 

Print Friendly

Related Posts