পানিবন্দি মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ: প্রবল পাহাড়ি ঢলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছিল। তাৎক্ষণিক হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে সাথে নিয়ে পানিবন্দি মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল ভূমিকায় এসব লোকেরা বড় ধরণের দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন। তারপরও খোয়াই, কুশিয়ারা, সুতাং ও করাঙ্গী নদীর আশপাশ নিম্নাঞ্চলের জমির ফসল অনেকটা পানির নিচে চলে যায়। ঘরবাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পানিতে তলিয়ে যায় বিভিন্ন গ্রামের রাস্তাঘাটও। ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। লোকজন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় রয়েছে।

সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলায় করাঙ্গী নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলে বাঁধ হুমকির মুখে পড়ে। প্রশাসনের উদ্যোগে ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ১৭ জুন দিবাগত রাত থেকেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়। এতে করে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়া থেকে রা পায়। তারমধ্যে উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের দুটি গ্রাম আকস্মিক বন্যায় প্লাবিত হয়। তিগ্রস্ত তিন শতাধিক পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে উপজেলা প্রশাসন।

mamun-2

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ এ বন্যা এলাকার পরিস্থিতি পরিদর্শন করেন। তিনি তিগ্রস্ত লোকজনের সাথে কথা বলে আশ্বস্ত করেন, জেলা প্রশাসন সবসময় দুর্গতদের পাশে আছে।
এ সময় তিনি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথেও কথা বলেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করতে নির্দেশনা দেন।

১৮ জুন নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ। তিনি দীঘলবাক উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত ১৫টি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন ও তাদের মধ্যে শুকনো খাবার, স্যালাইন ও জরুরি ঔষধসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

পরবর্তীতে তিনি কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী দীঘলবাক ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলেন এবং শতাধিক দুর্গত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌহিদ বিন হাসান, জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ, ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদসহ তৃণমূলের লোকেরা উপস্থিত ছিলেন।

mamun-3

১৭ জুন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মাছুলিয়া পাউবো বাঁধের নিকটবর্তী এলাকার বন্যাদুর্গত ৪০ টি পরিবারকে পার্শ্ববর্তী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশাসনের সহায়তায় তাৎক্ষনিক উদ্যোগে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ রাত দশটায় আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করে দুর্গত মানুষের সাথে কথা বলে ৪০ টি পরিবারের মধ্যে শুকনো খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

এ সময় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমদুল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্জিনা আক্তার, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

১৯ জুন বিকেলে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের নির্দেশনা অনুযায়ী বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বরের চকরামপুরের অসহায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে সরকারের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন ও প্রকল্প কর্মকর্তা আশীষ কর্মকার।

এদিকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ী ঢলে খোয়াই নদীর পানি বিপদ সীমার ওপরে উঠে যায়। তাই ১৫ জুন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ চুনারুঘাটের বাল্লা স্থল বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন। সর্বশেষ তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন।

 

Print Friendly

Related Posts