ফরাসি চক্রব্যূহেই আটকে গেলেন মেসি

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ম্যাচের শেষে ফ্রান্সের গ্যালারি যখন আনন্দে উদ্বেল  তখন মাথা নিচু করে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন লিয়ো। মাটিতে মাথা ঠুকছেন। ক্লাব ফুটবলে কিংবদন্তি হয়ে যাওয়া একজন ফুটবলার হতাশায় মুখ ঢাকছেন, কাপ হাতছাড়া করে বেরিয়ে যাচ্ছেন, সেটা দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, ফুটবল মাঠ সত্যিই নির্মম জায়গা।

দিয়েগো ম্যারাডোনা বসেছিলেন গ্যালারিতে। মেসির কিন্তু এ বারও ম্যারাডোনা হওয়া হল না। গতবার ফাইনালে উঠেও ট্রফি অধরা থেকে গিয়েছিল তাঁর। এ বার তো শেষ আটের সিঁড়িতেই পা রাখতে পারলেন না তিনি।।

যেটা সব থেকে খারাপ লাগছে তা হল মেসির মত বিশ্বের সফলতম ফুটবলারকে খেলতেই দিল না ফ্রান্স। অন্য দিক দিয়ে দেখলে আর্জেন্টিনা কোচই লিয়োকে অকেজো করার  অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন দিদিয়ের দেশঁর হাতে।

এমনিতে শনিবারের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটায় মেসিকে কিছুতেই খেলতে দেব না, এই মনোভাব নিয়ে নেমেছিলেন স্যামুয়েল উমতিতিরা। অভিমন্যুর চক্রব্যুহের মতো তাঁকে ঘিরে রাখার ব্যবস্থা করেছিল দেঁশর মাঝমাঠ আর রক্ষণ। মেসির পায়ে বল পড়লেই মাথা তুলে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক দেখছিলেন সামনে তিন বা চার জন বিপক্ষের ফুটবলার।

ফ্রান্স কোচের রণনীতি সফল। একটু নিচে থেকে রোমিং মিডিও হিসাবে খেলার চেষ্টায় থাকা মেসি সে ভাবে তাই জ্বলে উঠতেই পারলেন না। তাঁর একটা শট গ্যাব্রিয়েল মের্কাদোর পায়ে লেগে দিক বদল করে ফ্রান্সের গোলে ঢুকল। নব্বই মিনিটে একবারের জন্য  এগিয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। এর বাইরে মেসি দু’চারটে নিখুঁত পাস বাড়িয়েছেন শুধু। কিন্তু মেসির কাছে তো আরও কিছু দেখতে চেয়েছিলাম। বিষ মাখানো সেই ভয়ঙ্কর ফ্রি কিক, চোখ ধাঁধানো গোল, ওয়ান টু ওয়ান ড্রিবল করে বিপক্ষ ডিফেন্সকে ছারখার করে দেওয়া—এর একটাও তো এ দিন দেখতে পেলাম না। তারকা ফুটবলারকে তো বিপক্ষ মার্কিং করবেই, কিন্তু তা কেটে তো তাঁকে বেরোতে হবে। না হলে তাঁকে আলাদা চোখে দেখবে কেন বিশ্ব?

বার্সেলানার জার্সিতে ক্লাব ফুটবলে সাফল্যের শিখরে থাকা তারকার ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণ কোচ হর্হে সাম্পাওলির রণনীতি। সামনে শুরু থেকে আগুয়েরা বা হিগুয়াইনরা না থাকায় মেসিকে আটকানো সহজ হয়ে গিয়েছিল দেশঁর দলের। কারণ ফ্রান্স রক্ষণের উপর চাপই তৈরি করতে পারছিলেন না মারিয়া, পাভনরা।

Print Friendly

Related Posts