ফারিয়া মাহজাবিন গ্রেপ্তার, ৩ দিনের রিমান্ডে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের মধ্যে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার ধানমন্ডির নর্ডিক বিন কফি হাউসের মালিক ফারিয়া মাহজাবিনকে (২৮) তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ শুক্রবার ফারিয়াকে ঢাকা মহানগর হাকিম এ কে এম মঈন উদ্দিন সিদ্দিকীর আদালতে হাজির করে হাজারীবাগ থানার ওই মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে পশ্চিম ধানমন্ডি এলাকা থেকে ফারিয়া মাহজাবিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব-২)। আজ বেলা ১১টার দিকে ফারিয়াকে হাজারীবাগ থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব।  তার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭(২) ধারার মামলা দায়ের করা হয়।

সেই মামলায় ফারিয়াকে আজ রিমান্ডের জন্য আদালতে পাঠায় পুলিশ। পুলিশের রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের খাবার সরবরাহ, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানিমূলক গুজব ছড়িয়েছেন ফারিয়া মাহজাবিন। তার সঙ্গে আরে কে কে জড়িত ছিল তা জানতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।’

এ বিষয়ে হাজারীবাগ থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মকবুলুর রহমান বলেন, সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে ফারিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত বুধবার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাজমুস সাকিব (২৪) এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) ছাত্র। এদিন একই অভিযোগে কামরাঙ্গীরচরের জামিয়া নুরানিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আহমাদ হোসাইনকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

একই অভিযোগে রাজধানীর ইস্ট ওয়েস্ট, ব্র্যাক, নর্থ সাউথ ও সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একই অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সামনে থেকে তাসনিম আফরোজ ইমি নামের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীম ও আবদুল করিম নিহত হয়। এরপর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। আজ গ্রেপ্তার হওয়া সাকিব ও আহমাদ ওই আন্দোলনের মধ্যে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়েছেন বলে দাবি সিআইডির।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, গত ৪ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ফেসবুক পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কিছু লোক মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্নভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করে। তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট লেখা, পোস্ট, ছবি ও ভিডিও ইলেকট্রনিক বিন্যাসে সম্প্রচার করেছে।

সিআইডির ওই কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে সাকিব ও আহমাদকে শনাক্ত করে সিআইডি। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় তথ্যপ্রযুক্ত (আইসিটি) আইনে মামলা করা হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts