বনদস্যু জসিমের সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত বনদস্যু জসিম উদ্দিনের  বাসভবনসহ জবরদখলকৃত প্রায় দুইশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বনবিভাগ। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বনদস্যু জসিমের সাম্রাজ্য।

গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার চান্দরা পল্লীবিদ্যুৎ জোড়াপাম্প এলাকায় শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়।

বন বিভাগ ও স্থানীয়রা জানায়, পল্লী বিদ্যুৎ জোড়াপাম্প এলাকায় বনের গাছ কেটে জমি জবর দখল করে চার তলা ভবন গড়ে নিজে থাকতেন এবং বাড়ি-দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দিতেন বনদস্যু জসিম। বনবিভাগ, গাজীপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন সম্মিলিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে জসিমের চারতলা বাড়ির একপাশ ও সিড়ি এবং প্রায় দুইশ’ টিনশেড ঘর গুড়িয়ে দেয়। এতে বনের প্রায় ২০ বিঘা জমি দখল মুক্ত হয়।

ঢাকা বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ এনামুল হক এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অভিযানের সময় ঢাকা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ ইউসুফ, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সনজিব কুমার দেবনাথ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল শেখ, গোলাম সবুর, সহকারী বন সংরক্ষক এনামুল হক, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামসহ বনবিভাগ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কাপাসিয়া উপজেলার ভূলেশ্বর টেক এলাকা থেকে জসিম উদ্দিনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ওই রাত ৩টার দিকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। পুলিশ সেখানে গেলে টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এসময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই জসিমকে পড়ে থাকতে দেখে।

জানা যায়, জসিম উদ্দিন ছিলেন কালিয়াকৈরে এক মূর্তিমান আতঙ্ক। তিনি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। তিনি ১৫/১৬ বছর আগে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় জুতা তৈরির একটি কারখানায় পিয়নের চাকরি নিয়ে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজেই জুতা বানিয়ে সরবরাহ করতেন। এ জন্য এলাকায় মানুষের কাছে তার পরিচিতি ছিল মুচি জসিম হিসেবে।

এক পর্যায়ে জসিম নিজস্ব বাহিনী তৈরি করে বনের সরকারি জমি দখল শুরু করে। এভাবে বন বিভাগের প্রায় ৩০০ বিঘা সরকারি জায়গা দখল করে বন কেটে সেখানে নিজের বাসভবন, বস্তি/দোকান তৈরি করে ভাড়া দিতেন। পাশাপাশি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করতেন। বিভিন্ন মামলার আসামি করার ভয় দেখিয়ে এলাকার নিরীহ মানুষজনকে জিম্মি করে টাকা-পয়সা আদায় করতেন। এভাবে জসিম ওই এলাকায় তার রাজত্ব গড়ে তুলে কোটি কোটি টাকার মালিক হন। তার বিরুদ্ধে বনের জায়গা দখল ও গাছকাটাসহ বিভিন্ন অপরাধে ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

Print Friendly

Related Posts