বন্ধের দিনেও লাইসেন্স তল্লাশি শিক্ষার্থীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা স্কুল ড্রেসে রাজপথে বিভিন্ন গাড়ির লাইসেন্স তল্লাশি করেছে। গাড়ির লাইসেন্স না থাকলে সার্জেন্টকে মামলাসহ আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে তারা।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে দিনভর রাস্তায় গাড়ির লাইসেন্স তল্লাশির পর বিকেল চারটা থেকে সাড়ে চারটার ভেতর রাজধানীর অধিকাংশ সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেট, শ্যামলী, আসাদগেট, ধানমন্ডি ২৭, কলাবাগান, জিগাতলা, সায়েন্সল্যাব, নিলক্ষেত এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্রতিটি বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন গাড়ির লাইসেন্স দেখেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চালকের লাইসেন্সও পরীক্ষা করেছে তারা। এর থেকে রেহাই পায়নি পুলিশ, সাংবাদিক, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িও।

কোনো কোনো শিক্ষার্থীরা আবার একেকজন দক্ষ ট্রাফিক পুলিশের মতো রাস্তায় যানজট নিরসনে কাজ করেছে, সব গাড়ি ও রিকশাকে এক লাইনে এনে সড়কে সঠিক পন্থা অবলম্বন করা দেখিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা দিনভর চালকদের কাছে জানতে চায় লাইসেন্স আছে? থাকলে দেখান। না থাকলে সার্জেন্টকে বলছে, স্যার মামলা দেন। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন। পরে লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল চালানোর অভিযোগে পুলিশ, সাংবাদিক ও বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দেয় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার সকালে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব সহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় লাইসেন্স না থাকায় পুলিশর গাড়ি ও ভ্যান আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা লাইসেন্স পরীক্ষার সময় অনেক পুলিশের ড্রাইভারদের লাইসেন্স পায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এক বিফ্রিংয়ে বৃহস্পতিবার ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন: পুলিশের সকল ড্রাইভারেরই লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় সঙ্গে নিয়ে যান না কিংবা অনেক সময় এমটি বিভাগে তাদের লাইসেন্স জমা রাখে। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষনিকভাবে তারা লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।

চালকের লাইসেন্স দেখা আমাদের কাজ না জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাস্তায় আমরা নিরাপদ না। তাই বাধ্য হয়ে নেমেছি। রাস্তায় গাড়ির চাপায় আমার বোন-ভাই মারা যাবে এটি আমরা আর দেখতে চাই না। আমরা চাই নিরাপদ সড়ক। সরকার এটি নিশ্চিত করলেই আমরা ক্লাসে ফিরে যাবো। কারণ আমাদের কাজ পড়ালেখা করা; রাস্তায় আন্দোলন করা না।

তারা জানায়, আমরা রাস্তা বন্ধ করিনি। যেসব গাড়ির লাইসেন্স আছে তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যাদের লাইসেন্স নেই সেসব চালকদের ধরছি। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। তারা বলছেন, হেঁটে কর্মস্থলে গেলেও সড়কে প্রাণনাশ যেন থামে এজন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একমত আমরা।

Print Friendly

Related Posts