বরিশাল কারাগারে ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ আসামী

খান মাইনউদ্দিন, বরিশাল:  মাদক বিরোধী অভিযান চলছে। রমজানের প্রথম দিন থেকে একযোগে জেলা, মেট্রোপলিটন এবং ডিআইজি রেঞ্জ বরিশালের নেতৃত্বে পুরো বিভাগে শুরু হয় এই অভিযান।

অভিযানে মেট্রোপলিটন এলাকা ও জেলার আটককৃতদের কারাগারে স্থান দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন কারা কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, হাজতির সংখ্যা ইতিমধ্যে ধারণক্ষমতার তিনগুণ ছাড়িয়েছে। ফলে চলমান অভিযানের বাকি দিনগুলোতে আটক অপরাধীদের কোথায় রাখবেন তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ।

দায়িত্বশীলরা বলছেন, জোয়ারের মত হাজতি আসছে প্রতিদিন। যে কারণে থাকা, খাওয়া ও নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়েছে। যদিও এটি কোন সমস্যা নয় বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার মো: ইকবাল আকতার।

তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য জেলের তুলনায় বরিশাল জেলের পরিবেশ এবং জায়গা প্রশস্ত হওয়ায় মাদক বিরোধী অভিযানে আটককৃত অপরাধীদের রাখতে কোন সমস্যা হচ্ছে না।

ডিআইজি রেঞ্জ বরিশালের প্রেরিত তথ্যমতে, ৬ জেলায় (বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা) ২৪ ঘন্টায় ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। যাদেরকে ওই ছয় জেলার কারাগারে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ আটককৃতরা ছয়টি ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ায় কারাগারে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে না।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মূখপাত্র নাসির উদ্দিন মল্লিক জানিয়েছেন, অভিযানে প্রথম ১০ দিনে আটক হয়েছে মোট ১৩৮ জন। অর্থাৎ বরিশাল জেলা বাদে বাকি পাঁচ জেলায় যা আটক হচ্ছে তারও বেশি আটক হয় বরিশাল মেট্রো ও জেলা পুলিশের হাতে।

জানা গেছে. মেট্রোপলিটন পুলিশের হাতে আটক এবং বরিশাল জেলার ১০টি উপজেলা থেকে পুলিশের হাতে আটক অপরাধীদেরও একত্রে রাখা হয় এই কারাগারে। সে কারণে বরিশাল বিভাগের অন্যান্য ৫টি কারাগারের তুলনায় বাড়তি চাপে থাকতে হয় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষকে।

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে মোট ধারণ ক্ষমতা ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৩৫০ জন কয়েদী থাকায় বাকি ২৮৩টি আসন থাকে হাজতীদের জন্য।

ভারপ্রাপ্ত জেলার মনির হোসাইন জানিয়েছেন, গত শুক্রবার কারাগারে ১১৮৫ জন আসামী ছিল। আর শনিবার (২৬ মে) ছিল ১২১২ জন। অর্থাৎ ধারণ ক্ষমতার তিনগুণেরও বেশি আসামী রয়েছে কারাগারে। এদের জন্য যথেষ্ট খাবার সরবরাহ করা গেলেও থাকার ব্যবস্থা করাটা কষ্টকর।

ওদিকে কারাকর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আসামীদের জন্য কারাগারের ভেতর ও বাইরে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জেল সুপার ও ভারপ্রাপ্ত জেলার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। একইসাথে অধিক সংখ্যক জেল পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন।

ভারপ্রাপ্ত জেলার মনির হোসাইন জানান, কারাগারে কোন মাধ্যমেই যেন মাদক প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সব ধরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিন কারাগারে প্রবেশকারী আসামীদের দফায় দফায় চেক করা হয়। পাশাপাশি কারাপুলিশও যেন কোন অপরাধে না জড়ায় সে কারণে নজরদারী বাড়ান হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts