বাহুবলে খুন হওয়া সেনা সদস্যের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায়

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ:  হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মহিষদুলং গ্রামে সেনাবাহিনীর  অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট হাজী মোজাম্মেল হক হত্যার ঘটনায় আসামীরা মামলার বাদীকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। মামলা আপোষ না করা হলে মোজাম্মেল হকের স্ত্রী এবং সন্তানদেরকেও খুন করবে বলে হুমকি দিয়ে তাদের চলাফেরা বাধাগ্রস্থ করছে আসামীরা। এমনকি মিথ্যা ডাকাতি মামলা দিয়ে তার পরিবারের লোকজনকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। মোজাম্মেল হকের স্ত্রী এবং সন্তানরা বাহুবল থানায় ৩টি জিডি এবং র‌্যাবের কাছে আবেদন করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে ৯ জুন শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে মোজাম্মেল হকের স্ত্রী এবং মামলার বাদ রওশনারা আক্তার জোৎ¯œা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, তার স্বামী এলাকায় একজন শান্তিপ্রিয় এবং স্বনামধন্য ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত ছিলেন। ২০১১ সালে তার বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটল একই গ্রামের ডাকাত মারাজ মিয়া গংদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন তিনি। এর পর থেকেই তাকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে মারাজ ময়া গংরা। এ ব্যাপারে মোজাম্মেল হক ২০১৩ সালের ১৪ জুলাই নিজের নিরাপত্তা ছেয়ে শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পে আবেদন করেছিলেন তিনি। পরে মারাজ মিয়া গংরা ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মোজাম্মেল হককে নির্মম ভাবে খুন করে।  আমি এর ২ দিন পর বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করি। ১২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করলেও অভিযোগ পত্রে একজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে আমরা আদালতে নারাজী প্রদান করলে বাদপরা আসামীকেও অন্তর্ভূক্ত করে অভিযোগপত্র গ্রহণ পূর্বক বিচার কাজ শুরু হয়। আসামীরা বিভিন্ন মেয়াদে কারা ভোগ করার পর হাইকোর্টসহ হবিগঞ্জের আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আমার উপর শুরু করে অকথ্য নির্যাতন। আমাকে এবং আমার সন্তানদেরকে মেরে ফেলবে বলে সরাসরি এবং টেলিফোনে হুমকি দেয়। রাস্তায় চলাফেরায় তারা আমাদেরকে বাধাগ্রস্থ করে। বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে লোক পাঠায় মামলা আপোষ করার জন্য। তারা বলে বেড়াচ্ছে যদি আপোষ না করা হয় তাহলে আমাদেরকেও মেরে ফেলবে। তারা বলছে একজনের জন্য যদি শাস্তি পেতে হয় তাহলে সবাইকে মেরেই শাস্তি ভোগ করব।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর এখনও রক্তের দাগ মুছেনি। তার মৃত্যুতে আমার পরিবার হয়ে পড়ে দিশেহারা। আমি এখনও পাইনি পেনশনের টাকা। বিদেশে থাকা আমার বড় ছেলে পিতা খুনের ঘটনা শুনে চলে এসেছে দেশে। ছোট ছেলেও বিভ্রান্ত। থানা এবং র‌্যাব অফিসে অনেক দরখাস্ত দিয়ে কোন প্রতাকার না পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে ছুটে এসেছি। তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে নিহত মোজাম্মেল হকের ছোট ছেলে আল আমিন, মেয়ে আখি আক্তার এবং ভাতিজা আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।

 

Print Friendly

Related Posts