বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নেপালে

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সাত দেশের জোট বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে নেপাল পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে রওনা হওয়া বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট স্থনীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। খবর বাসসের

শাজহালাল বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রমুখ।

কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বগত জানান নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঈশ্বর পোখারেল এবং নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশরাফি বিনতে শামস। প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা করে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়া হয় হোটেল সোয়ালটি ক্রাউনি প্লাজায়। দু’দিনের সরকারি সফরে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।

বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন বা বিমসটেক হল বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সাত দেশের একটি জোট।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর হোটেল সোয়ালটি ক্রাউন প্লাজায় সাতটি আঞ্চলিক দেশের নেতাদের নিয়ে চতুর্থ বিমসটেক সম্মেলন শুরু হবে। এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে একটি সেতুবন্ধ তৈরি করা।

শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই বৈঠককে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা এবং ভুটানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দাশো সেরিং ওয়াংচুকের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করবেন। বিমসটেকের সদস্য দেশ মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি এ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না।

প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, সম্মেলন উদ্বোধনের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃথক বৈঠক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।

তিনি জানান, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের রাষ্ট্রপতির বাসভবন শীতল নিবাসে রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং তার দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সফরের প্রথম দিনেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপালের রাজপ্রাসাদে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং তার দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন। এখানেই শেখ হাসিনার সঙ্গে ভুটানের প্রধান উপদেষ্টার পৃথক বৈঠক হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম জানান, রোহিঙ্গা সংকট এ শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনায় না এলেও পার্শ্ব ইভেন্টের আলোচনায় আসতে পারে।

তিনি বলেন, বিমসটেক হচ্ছে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা সংক্রান্ত আঞ্চলিক জোট। ফলে এখানে এ দুটি বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েই মূল আলোচনা হবে।

আশা করা হচ্ছে, এবারের শীর্ষ সম্মেলনে বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে গ্রিড কানেকটিভিটি নিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হবে, এটাই হবে বড় অর্জন। এ ছাড়া সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আইনি বিষয়েও একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান শেষে শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন।

Print Friendly

Related Posts