ব্যক্তিকথন : ভূবন মোহন চারণিকের

(প্রয়াত অগ্রজ প্রতিম কবি ও কথাশিল্পী বেলাল চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন)
সৈয়দ রফিকুল আলম

rafiqul+

আশির শুরুতে কথাশিল্পী আমার পরম অগ্রজ সুচরিতদার (সুচরিত চৌধুরী) সঙ্গে আমাদের পৈতৃক প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন, সৌম্য স্বাস্থাবান, মুভিটোন হিরোর ছায়ার অবয়বে। পরিচয় পর্ব সমাপ্তিতে একাগ্র চিত্তে আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন, অতঃপর স্ব উদ্যোগে বললেন এ বনেদী প্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে আমার দশ বছর বয়স হতে জানি, মামার বাসায় থাকতাম এবং আপনার পিতার সঙ্গে মামার বন্ধুত্ব ছিল। আমরা দুজনের বয়সের গড়পড়তা হিসাব করলাম। উনি আমার দশ বছরের অগ্রজ হবেন। অর্থাৎ তখন আমার জন্মই হয়নি। পূর্ব পারিবারিক পরিচয়ের কারণে দুজনই আমরা আনন্দিত এবং মোহিত।

যাহোক উনার সাহিত্যে কর্মের প্রতি দৃকপাতের প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনা, ইতোমধ্যে অনেক লেখালেখি হয়ে-গ্যাছে অনেক গুণীজনেরা অন্তর অনুভূতির বহি:প্রকাশ তুলে ধরেছেন। তাই এ দিকে না গিয়ে বলতে পারি, তিনি ছিলেন আমাদের সাহিত্য জগতের প্রতিষ্ঠান, সবার প্রতি যে অকৃত্রিম সহযোগীর মনোবৃত্তি অথচ নিজের উৎকর্ষতার প্রতি কোন খেয়ালে ধ্যানমগ্ন হতে দেখেনি, আর যখন কলম চালাতেন অপূর্ব শব্দ শৈলী এবং কাহিনীর কাঠামো পাঠককে অভূতপূর্ব আনন্দ দিত।

কোলকাতার বড় বড় সাহিত্যিক আগমনে আমার ডাক পড়তো এবং আমার লেখার উৎকর্ষতা নিয়ে প্রচন্ড আশাবাদ ব্যক্ত করতেন যাতে আমি লজ্জ্বায় সংকুচিত হয়ে নমিত হয়ে যেতাম (কিছু বলতে পারতাম না) কেননা আমাকে সার্বক্ষণিক ছোট ভাই বলে সম্ভোধন করতেন, দুঃখ হলো আমরা গুণীর কদর যথাযথ পালন করি না। যা হয় আর কি? তবু আনন্দিত একটি পদক বিলম্ব হলেও তুলে দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহর কাছে কায়োমনো বাক্যে আরজি জানাই আপনাকে যেন বেহেস্তের প্রথম স্থান জান্নাতুল ফেরদৌস বকস্ করেন। আমিন।

Print Friendly

Related Posts