ভোট গ্রহণ শেষ, প্রাণ হারিয়েছে ১২ জন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদেশে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত। ভোটাররা নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটপ্রদান করেছেন।

সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ১২ জন।  বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রও।

৩০০ আসনের মধ্যে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ২৯৯ আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। স্থগিত হওয়া গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি।

এবার ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রে ২ লাখ ৭ হাজার ৩১২টি ভোটকক্ষে মোট ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা ছিলো। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছেন ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন।

অনেক স্থানে সহিংসতা, নাশকতা, কারচুপি, ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে অনেক আসনে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের খবরও পাওয়া গেছে।

ভোটে সরকারবিরোধী প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রায় অর্ধশত প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। দেশের বেশির ভাগ আসনেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। নির্বাচনে সহিংসতায় নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। এ ছাড়া বিএনপির কর্মী ও সাধারণ ভোটারও নিহত হয়েছেন।

ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর সকালে অনেকটা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিয়েছেন। তবে বেশির ভাগ কেন্দ্রে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের এজেন্ট না থাকার খবর সকাল থেকেই পাওয়া গেছে। অবশ্য সকালে যাঁরা ভোট দিতে গেছেন, তাঁরা ভোট দিতে পেরেছেন। কিন্তু বেশির ভাগ আসনে বেলা ১১টার পর থেকে পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে থাকে। কেন্দ্রগুলোতে ক্ষমতাসীনদের আধিপত্য বাড়তে থাকে। সাধারণ ভোটারের উপস্থিতি কেন্দ্রে কমতে থাকে।

নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টি আসনে একযোগে ভোট গ্রহণ করা হয়। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোট হয়নি।

সারা দেশে  নিহত ১২ জন এর মধ্যে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা ৬ জন। এ ছাড়া একজন বিএনপির ও একজন ইসলামী ছাত্র সেনার নেতা। বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। যশোরের একজন প্রার্থীর ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছে। ভোটাররাও ভোট দেওয়া নিয়ে নানা অভিযোগ করেছেন; বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের সামনে সিল দিতে বাধ্য করা, ব্যালট নিয়ে কর্মীদের সিল দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বলেছেন, নৌকার জয় হবেই। আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ভিকারুননিসা নূন কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাঁদেরই জয় হবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এবার ভোট ভালোই হয়েছে। ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে ৬ লাখ ৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts