মায়ের লাশ উদ্ধারের ২দিন পর সন্তানের লাশ উদ্ধার

 
জুবায়ের চৌধুরী পার্থ, ভোলা : চরফ্যাশনে মা জাহানারা বেগমের লাশ দাফন করার চার ঘন্টা পর শিশু আবিরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (৩১মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় বাড়ি সংলগ্ন ডোবা থেকে আবিরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে চরফ্যাশন থানা পুলিশ।

গত বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে চর মাদ্রাজের চর আফজাল এলাকায় স্বামী মাহাবুব আলমের ঘরে থেকে স্ত্রী জাহানারা বেগমের জবাই করা লাশ উদ্ধার করা হয়। জাহানারাকে হত্যার পর থেকে তার শিশু সন্তান আবির নিখোঁজ ছিল। অপহরন হওয়ার দুই দিন পর বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় আবিরের লাশ ভেসে উঠে বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে। একই ডোবা থেকে ধারালো দা উদ্ধার করা হয়েছে। এই দা মা ও ছেলের খুনে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

শুক্রবার চরফ্যাশন থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহাবুব আলম সংবাদকর্মীদের জানান, ‘জমির বিরোধ নিয়ে তার মামা মিলন নকতীর নেতৃত্বে ৬/৭ জনের দুর্বৃত্ত দল স্ত্রী জাহানারাকে জবাই করে হত্যা করে। মাকে হত্যার সময় চিনে ফেলায় শিশু আবিরকে অপহরন করে নিয়ে যায় তারা। স্ত্রী জাহানারাকে জবাই করে হত্যা এবং সন্তান আবিরকে অপহরণ করে নেয়ার সময় মিলন নকতীর নেতৃত্বে খুনিরা তাকে ঘরের পাশে গাছের সাথে বেঁধে রাখে।’

সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলার সময় মাহাবুব অসংলগ্ন কথা বার্তা বলে। এসময় মাহাবুবের গলায় ক্ষতচিহ্ন ছিল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তের চিহ্ন ছিল। গলায় আঘাত এবং শরীরে রক্তের যোগসূত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মাহাবুব ছিল নির্বিকার।

এদিকে মেয়ে জাহানারাকে হত্যার ঘটনায় চরফ্যাশন থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় নিহত জাহানারার বাবা সৈয়দ আহমদ চৌকিদার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, নিকটাত্মীয় মিলন নকতীর সাথে জমির বিরোধ থাকায় মিলন নকতীকে ফাঁসাতে জামাই মাহাবুব, বেয়াই মান্নান মাঝি, বেয়াইন মোর্শেদা এবং পুত্রা ইব্রাহিমসহ অপরাপর আসামীরা পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ে জাহানারাকে জবাই করে হত্যা করেছে।

এই মামলা দায়ের করার পরপরি পুলিশ ওই চার জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল শনিবার আদালতে সোপর্দ করেছে।

চরফ্যাশন থানার ওসি ম.এনামূল হক জানান, থানায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহাবুব স্বীকার করেছে- মামা মিলন নকতীকে ফাঁসাতে ভাই ইব্রাহীমের সহায়তায় সে স্ত্রী জাহানারাকে জবাই করে হত্যা করেছে। স্ত্রীকে হত্যার পর ভাই ইব্রাহীম পুত্র আবিরকে নিয়ে গেছে বলেও সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

অপরদিকে শনিবার দুপুরে মা জাহানারা বেগমের লাশ দাফনের কয়েক ঘন্টা পরই বাড়ির পুকুর থেকে শিশু আবিরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আবিরের লাশ পুকুরে ভেসে উঠলে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তা উদ্ধার করে। ধারনা করা হচ্ছে- ঘরে মাকে জবাই করার আগে বা পরে একই খুনিরা শিশু আবিরের গলাকেটে বাড়ি সংলগ্ন ডোবায় ফেলে দিয়েছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীদের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব সত্য ষ্পষ্ট হবে বলে পুলিশ আশা করছে।

Print Friendly

Related Posts