মা ও শিশু দুই মেয়েকে হত্যার পর লাশ গুম!

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও দুই শিশু মেয়ের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একই দিনে ওই তিনজনকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছিল। রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আজ রোববার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন আহমেদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর এই তিন হত্যাকাণ্ডে জড়িত গ্রেপ্তার দুই আসামির মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর এক আসামির রিমান্ডের শুনানি আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং এলাকার মাসুদ দেওয়ান তাঁর প্রথম স্ত্রী পোশাক কারখানার শ্রমিক আঞ্জুবী আক্তারের অমতে তাঁরই বান্ধবী শোভা আক্তারকে বিয়ে করেন। এই বিষয়টি নিয়ে তিনপক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে মাসুদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তার ও চাচাতো শ্যালক সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

গত ৯ জুন মাসুদ তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ও চাচাতো শ্যালক মিলে প্রথমে আঞ্জুবী আক্তারকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে একইভাবে বড় মেয়ে মাঈদা (৭) ও দেড় বছর বয়সী ছোট মেয়ে মাহিকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর তাদের লাশ ড্রাম ও বস্তায় ভরে নির্জন স্থানে ও একটি মাছের খামারে ফেলে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর গত ১১ জুন বিকেলে পুলিশ ভাঙারপুল এলাকার ডিএনডি ইরিগেশন খালের পাশে ড্রাম থেকে আঞ্জুবী আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। এরপর ১৬ জুন ঈদের দিন আটি হাউজিং এলাকায় একটি মাছের খামারে ভাসতে থাকা বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু মাহির লাশ উদ্ধার করা হয়। ১৮ জুন আটি এলাকার একই খামার থেকে উদ্ধার করা হয় শিশু মাঈদার লাশ। পরে নিহত আঞ্জুবীর ছোট বোন লাশ শনাক্ত করলে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করে।

গতকাল শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে আঞ্জুবীর স্বামী মাসুদকে এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ফতুয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর চাচাতো শ্যালক সোহেলকে।

আজ রোববার বিকেলে আসামি সোহেল নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আশেক ইমামের আদালতে তিন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। অপর আসামি মাসুদ দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হলে আদালত শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার দিন নির্ধারণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করেছে। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মাসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সাত্তার, পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম ও পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক।

Print Friendly

Related Posts