মা হয়েছেন এক পথশিশু

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার এক পথশিশু মা হয়েছেন কিন্তু বাবা হননি কেউ। নরপশুদের জঘন্য লালসার স্বীকার হয়ে আজ পথ শিশু সন্তান প্রসব করে তখন কে এই সন্তানের বাবা? কে নিবে এই সন্তানের দ্বায়িত্ব এ নিয়ে শুরু হয় নানা প্রশ্ন।

এমনটাই ঘটেছে সদর উপজেলার ২নং ইলিশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মৃত কাশেম মিয়ার ১৪ বছরের নাবালিকা শারমিনের সাথে।

সোমবার সকালে এই প্রতিবেদন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাবালিকা শারমিনের কোলে নবজাতক শিশু দেখে সবার মুখে একই প্রশ্ন এই নবজাতকের বাবা কে? তথ্য নিয়ে জানাযায়, শারমিনের জন্মের পরেই বাবা কাশেম মিয়া মৃত্যুবরণ করেন, মা আনোয়ারা বেগম তাদের ৪ ভাই বোনকে রেখে অন্যথায় চলে যান।

মায়ের সুখ মা বেছে নিলেও ভাবেননি তার ৪ সন্তানের ভবিষ্যৎ। ৪ সন্তানের মধ্যে ৩ বছর বয়সী কালু কে অন্যত্র লালন পালনের জন্য দিয়ে দেন। অসহায় শারমিন মাথা গুজাবার কোন ঠাই না থাকায় ছোট ২ ভাই বোনকে নিয়ে অর্ধহারে অনাহারে কোন রকম খেয়ে না খেয়ে জীবন যাপন করে। এই সুযোগে শারমিনের আপন চাচাত ভাই একই এলাকার খোরশেদ মিয়ার ছেলে আলাউদ্দিন (২৫) তার আরো দুই সহযোগী নিয়ে জোর পূর্বক মেঘনা নদীর ঐ পাড়ে স্পিডবোট দিয়ে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। এর কয়েক মাস পরেই অন্তসত্তা হয়ে পড়ে শারমিন।

মেয়ের প্রতি এই লজ্জা জনক ঘটনার খবর পেয়ে শারমিনের মা আনোয়ারা বেগম এসে ধর্ষন কারীদের বিচারের জন্য প্রথমে এলাকার মাতাব্বরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোন বিচার পাননি। এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য টাকার বিনিময় রফাদফাও করেছেন।
কিন্তু বিষয়টি চলে যায়, থানা পুলিশ পর্যন্ত। এক পর্যায়ে পুলিশ শারমিনের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে থানায় মামলা নেন। ঐ মামলায় শারমিন বাদী হয়ে আলাউদ্দিনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১জনসহ থানায় মামলা দায়ের করেন। যাহার নং- ০৬। মামলার পরেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে আলাউদ্দিন কারাগারে রয়েছে।

এদিকে নাবালিকা শারমিন রবিবার রাতে ভোলা সদরের অফিসার পাড়ার মোড়ে রাস্তার মধ্যে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মের পরেই ভোলা শহরে বিষয়টি সবার মুখে মুখে নাবালিকা শারমিনের এই পুত্র সন্তানের বাবা কে?

শারমিনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য পূর্ব ইলিশার পাকার মাথার হাজি বাড়ীতে গিয়ে কথা হয় শারমিন ও তার মা এর সাথে। শারমিন জানান, আমার চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগী আমাকে ধর্ষন করে। এর পরেই আমি অন্তসত্তা হয়ে পরি। আমার এই সন্তানের বাবা আলাউদ্দিন।

শারমিনের মামা মফিজ মিয়া ও তার স্ত্রী জানান, শারমিনের এ অবস্থার পর স্থানীয় আলাউদ্দিন ফরাজিসহ একটি গ্রুপ ফয়সালা করেছে শুনেছি। স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বোট ব্যবসায়ী নিজাম ভুলাইর বোট ড্রাইভার ছিলেন এবং ঐ বোট দিয়েই শারমিনকে তুলে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে ইলিশা পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোক্তার হোসেন জানান, মামলা হওয়ার পরে আমরা আসামি আলাউদ্দিনকে গ্রেফতার করি। বর্তমানে আলাউদ্দিন কারাগারে রয়েছে এবং ঐ শিশু সন্তানকে আমরা ডিএনএ পরীক্ষা করাবো ও এর সাথে জড়িত কেউ থাকলে তাদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।

Print Friendly

Related Posts