মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৮৪,৮৬৪ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে যাত্রীদের

সাহিদ সিরাজী : ঢাকা-কলকাতা চলাচলরত জাতীয় পতাকাবাহী আন্তর্জাতিক ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের অজান্তেই টিকেটের মূল্য ভ্যাট ও ভ্রমণ কর-এ যোগফল ভুল দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে রেলভবনে কেউ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি।

জানা যায়, ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী গত ১৪ এপ্রিল ২০০৮ ইং হতে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস চলাচল করছে। দুই দেশের যাত্রীর কাছে সড়ক পথ থেকে রেলপথটি দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠলে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি নবায়ন করে সপ্তাহে ৬দিন মৈত্রী চলাচল শুরু করে। যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের দর্শনা ও ভারতের গেদে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের জন্য যাত্রাবিরতি তুলে দিয়ে ট্রেনটি এখন বিরতী ছাড়াই ঢাকা-কলকাতা চলাচল করায় ট্রেনটির প্রতি দুই দেশের যাত্রীদের মধ্যে আরো আগ্রহ বেড়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুই দেশের কতিপয় কর্মকর্তারা গত ৮ ডিসেম্বর থেকে টিকেটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করে এসি চেয়ার সর্বসাকুল্যে ১৭৩০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা ধার্য করে।

প্রতিটি টিকেটের গায়ে মূল্য নির্ধারণ করা আছে টিকেট ভাড়া ১৬৮০ ভ্যাট ২৫২ এবং ভ্রমণ কর ৫০০ মিলিয়ে মোট মূল্য ২৫০০ টাকা। যাত্রীরা সরল মনে সর্বসাকুল্যে টিকেটের মূল্য ২৫০০ টাকা দেখেই ক্রয় করে আসছে।

 

ticket

 

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মৈত্রী ট্রেনে ভারতীয় নাগরিক ভুলুয়া মঙ্গল ভৌমিক পাসপোর্ট নংR6948881 টিকেটের পিএনআর নং 0000604227 বিষয়টি হাতে কলমে যাত্রীদের নজরে আনেন। এতে দেখা যায় ভাড়া ১৬৮০ ভ্যাট ২৫২ ভ্রমণ কর ৫০০ টাকার যোগফল ২৪৩২ টাকা। বাংলাদেশের রেলওয়ে যোগফল ভুল দেখিয়ে যাত্রীদের অজান্তেই প্রতি টিকেটে ৬৮ টাকা অতিরিক্ত নিয়ে যাচ্ছে।

সপ্তাহে ৪দিন মৈত্রী ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দ্যশে ছেড়ে যায়। প্রতিদিন এসি চেয়ারে ভ্রমণ করে ৩১২জন যাত্রী সপ্তাহে ৪ দিন চলাচল করলে যাত্রী সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৪৮। প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ৬৮ টাকা আদায় করে সপ্তাহে ভুল যোগফলে আদায় হয় ৮৪,৮৬৪ টাকা। যা আদায় করা হয়েছে গত ৮ ডিসেম্বর থেকে প্রতি সপ্তাহে।

গতকাল সোমবার যাত্রীদের পক্ষে রেল মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হলে রেল সচিব অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মোঃ মিয়া জাহানকে ডেকে পাঠিয়ে এর ব্যখ্যা চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক(অপারেশন) কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি।

এই দিকে যাত্রী সাধারণের পক্ষে দেশে-বিদেশে দেশের ও রেলপথ বিভাগের সুনাম রক্ষার স্বার্থে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর ব্যবস্হা নেওয়ার দাবী জানান। একই অভিযোগ পৃথকভাবে রেলওয়ে ডিজি বরাবরও দেওয়া হয়েছে।

Print Friendly

Related Posts