শাহরুখ খানের ‘জিরো’ ফ্লপ যে কারণে..

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শাহরুখ খানের ‘জিরো’ চমক দেখাতে গিয়ে হিরো প্রায় জিরো হয়েই গেল! খর্বাকৃতি নায়ক (শাহরুখ খান) আর সেরিব্রাল পলসির নায়িকা আফিয়া (অানুষ্কা শর্মা)। শুনেই মনে হয়, দারুণ প্লট! কিন্তু নিদারুণ হয়ে যায় গল্পের অসঙ্গতিতে।

শাহরুখ ভেবেছিলেন খর্বাকৃতি মানুষ হয়ে একেবারে চমকে দেবেন সকলকে। কিন্তু উল্টোটাই হল। শাহরুখের অন্ধ ভক্তেরা যথেচ্ছ সিটি বাজাতেই পারেন তাকে পরদায় দেখে। কিন্তু গল্পের গরু গাছে উঠতে উঠতে দর্শকের ধৈর্যচ্যুতি ঘটায়।

উত্তরপ্রদেশের চার ফুট ছ’ইঞ্চির মানুষ ‘বাউআ’বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে। বলে, ‘তোমার স্পার্ম ছোট বলে আমি বামন হয়ে জন্মালাম’। ব্যবসায়িক বাবা, অথচ ছেলের হাতের মুঠোয় অগাধ টাকা ঢেলে যান। ছেলে কথায় কথায় অঞ্চলের মানুষদের নানা কারণে টাকা দিয়ে বেড়ায়। অভিনেত্রী ববিতার সিনেমা দেখতে গিয়ে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে টাকা ওড়ায়। এরকম টাকা ওড়ানোই যেন তার জীবন। নাহ্, একটু আধটু বামন বলে দুঃখ পায় সে। ওই পর্যন্ত।

হঠাৎ এই সদা হইহই জীবনে সে দেখা পায় নাসার বিজ্ঞানী অনুষ্কা শর্মার। ব্যস, দেখনা দেখ প্রেম! সে প্রেম কিন্ত আর একজন খর্বাকৃতি মানুষ আর সেরিব্রাল পলসির মহিলার বাস্তব প্রেম নয়। এখানে সুপারস্টার শাহরুখ আর গ্ল্যামার গার্ল অনুষ্কার প্রেম। পাঁচতারা হোটেলের ঝাড়বাতি ভেঙে ভেঙে পড়ে এই ফ্যান্টাসির প্রেমে। অবশ্যই আসে শরীর। আর তার পরেই বলা নেই কওয়া নেই বিয়ের দিন শাহরুখ পালায়। কারণ তার ববিতাকে চাই।

চাইলেই উত্তরপ্রদেশের মামুলি ছেলে ডান্স কম্পিটিশনে নাম লিখিয়ে, অবশ্যই সবচেয়ে ভাল নেচে ববিতার কাছে পৌঁছে যায়? না, প্রশ্ন করলে হবে না। সিনেমা তো লার্জার দ্যান লাইফ! কিন্তু লিখতে বাধ্য হচ্ছি,‘জিরো’-র প্রতিটি ফ্রেম ‘লাইফহীন’। দর্শক শাহরুখ, অনুষ্কা আর ক্যাটরিনা ওরফে ছবির ববিতার জন্য প্রচুর ধৈর্য ধরেছেন। তাও শেষে পপকর্নে পেট ভরানো ছাড়া আর কিছুতে মন ভরেনি। শাহরুখ খানের ত্রিকোণ প্রেম! অথচ মনকাড়া সংলাপ নেই!হল থেকে বেরিয়ে গেলে একটা গানও মনে পড়ে না

শাহরুখ খান একটুও ভাবলেন না! খর্বাকৃতি মানুষ আর সেরিব্রাল পলসির বিজ্ঞানী কাছাকাছি এলে তাদের জীবনে ঝড়-বৃষ্টি-শঙ্কা-খুশি কেমন করে তাদের জীবন সাজায়? ‘জিরো’-তে বলিউডি হিরোগিরি না দেখালেই নয়?

‘ফ্যান’, ‘দিলওয়ালে’কিংবা ‘যব হ্যারি মেট সেজাল’—শাহরুখের আগের সব ছবি বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে।

সিনেমার প্রথম শো শেষ হওয়ার আগেই হল থেকে দর্শকরা নেতিবাচক মন্তব্য লিখে টুইট করেছেন। প্রথম দিনই সিনেমার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। শাহরুখ, অনুষ্কা শর্মা এবং ইমতিয়াজ আলিও ছবির সাফল্য এনে দিতে পারেননি।গল্প বলতে কি ভুলে গেলেন বি টাউনের নির্মাতা আনন্দ এল রাই?

অন্তঃসারশূন্য ছবির একমাত্র ভাল লাগা অনুষ্কা শর্মা।দরকচা চিত্রনাট্যে তিনিই বা কী করবেন? কৃত্রিম হিরোগিরিতে ছবি ‘জিরো’ জিরো হয়েই থেকে গেল!

Print Friendly

Related Posts