শিক্ষা বৃত্তি ও সম্মাননা প্রদান করলো আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে দরিদ্র, মেধাবী ও কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি এবং গুণী শিক্ষকদের আজীবন সম্মাননা দিয়েছে আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশন। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৮ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। আর সম্মাননা পান যদুনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র এবং একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
টাঙ্গাইলের নাগরপুরের যদুনাথ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফতাব উদ্দিনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের বৃত্তি এবং শিক্ষকদের সম্মাননা দেয়া হচ্ছে। এই নিয়ে টানা ছয় বার এই বৃত্তি ও সম্মাননা দিল আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশন।

শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বৃত্তি ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা করে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, আইসিটি, হোম অ্যান্ড কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সস পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি এবং ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান। সভাপতিত্ব করেন নাগরপুরের যদুনাথ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বাবু গোপেন্দ্র মোহন সাহা। প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল-৬ আসনের (নাগরপুর-দেলদুয়ার) সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আবদুল বাতেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংসদের স্ত্রী মমতাজ বেগম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঘুনিপাড়া আব্দুর রশিদ স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ জুয়েল।

পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে আফতাব উদ্দিনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে আদর্শবান শিক্ষক আফতাব উদ্দিনের সহকর্মীরা তাদের বক্তব্যে প্রয়াত শিক্ষাবিদের জীবন ও কর্মের ওপর আলোকপাত করেন। এরপর বৃত্তিপ্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থী এবং আজীবন সম্মাননা পাওয়া শিক্ষকদের হাতে নগদ অর্থ, সম্মাননা স্মারক এবং ওয়ালটনের পক্ষ থেকে উপহার তুলে দেয়া হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ও ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান বলেন, ‘শিক্ষার সার্বিক অগ্রগতিতে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাবে আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশন।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খন্দকার আবদুল বাতেন বলেন, ‘আফতাব উদ্দিন ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ একজন শিক্ষক। বর্তমানে সময়ে যারা শিক্ষকতা করছেন, তাদের উচিত তার জীবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং সুশিক্ষিত মানুষ তৈরিতে তার আদর্শ অনুসরণ করা। তিনি শুধু একজন শিক্ষকই ছিলেন না, তিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ ছিলেন।’ এসময় শিক্ষার মানোন্নয়নে আফতাব উদ্দিন ফাউন্ডেশনের সফল অগ্রযাত্রা প্রত্যাশা করেন তিনি।

উল্লেখ্য, আফতাব উদ্দিন দীর্ঘ ৪২ বছর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। জেলার প্রথিতযশা শিক্ষক হিসেবে সর্বজনে সমাদৃত এই গুণী শিক্ষক ১৯৯৪ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কারে ভূূষিত হন। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকের পুরস্কার ও ক্রেস্ট গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৯৭ সালের ২১ আগস্ট যদুনাথ পাইলট মডেল স্কুল ও কলেজে শিক্ষকতায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আফতাব উদ্দিন।

Print Friendly

Related Posts