শুরু হলো স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮

কারিগরি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত প্রকল্পে বিনিয়োগ করার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: কারিগরি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশ এবং শিল্প-কলকারখানাগুলোকে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হলো ‘স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮’। বৃহস্পতিবার ঢাকায় আইডিইবি ভবনে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি কারিগরি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদেরকে আহ্বান জানান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (STEP)’ এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ডিপ্লোমা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীদের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশের লক্ষ্যে ২০১৪ সাল থেকে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছে।

স্কিলস কম্পিটিশন আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে কারিগরি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের পথ প্রশস্ত করা, তাদের সঙ্গে শিল্প-সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা এবং শিল্প-কলকারখানাগুলোকে উদ্ভাবনী প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার মধ্য দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখা।

এবারের প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিগত চার বছরের চূড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণকারী প্রায় ১০০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শন করা হয়। প্রকল্পগুলোর বাণিজ্যিক উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বিভিন্ন শিল্পোদ্যোক্তা ও কলকারখানার মালিক প্রাথমিকভাবে আগ্রহ ব্যাক্ত করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। শীঘ্রই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব। আর এ জন্য আমাদেরকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।”

nahid-1
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বৃহস্পতিবার ঢাকায় স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট আয়োজিত ‘স্কিলস কম্পিটিশন-২০১৮’ এর উদ্বোধন শেষে সেখানকার প্রদর্শনীতে উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, শিক্ষা হওয়া উচিৎ দক্ষতা-নির্ভর। কারণ দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে শিক্ষা নিয়ে অনেককেই বেকারত্বের যন্ত্রণা মোকাবেলা করতে হয়। বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে আর এর মধ্যে কারিগরি শিক্ষাকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

দক্ষতা-নির্ভর কারিগরি শিক্ষাই কেবল পারে দেশকে দারিদ্রের দুষ্টচক্র থেকে মুক্ত করে সরকারের নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশকে মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে রূপান্তর করতে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং কারিগরি শিক্ষাকে আধুনিকায়নের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, যোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনারা যদি আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন তবে তারা আরও বেশি আবিষ্কারের দিকে মনোযোগ দেবে এবং দেশ, কাল ও বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন নতুন প্রকল্প উদ্ভাবন করবে। এতে করে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে “

নাহিদ বলেন, বর্তমান সরকার যে কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করেছে তার প্রতিফলন দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় দৃশ্যমান। কারিগরি শিক্ষায় এখন ভর্তি হার ১৪ শতাংশের বেশি। সরকার এই হার ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, “আমরা যদি ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা পেতে চাই তবে আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার কোনো বিকল্প নেই।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও উন্নয়ন) একেএম জাকির হোসেন ভুইঞা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) রওনক মাহমুদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র অপারেসন্স অফিসার ড. মোখলেছুর রহমান এবং আইডিইবি প্রেসিডেন্ট একেএমএ হামিদ।

দেশের খ্যাতনামা উদ্যোক্তা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা, ভেঞ্চার গ্রুপ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং কারিগরি শিক্ষা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ প্রদর্শনীতে উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন।

Print Friendly

Related Posts