স্বামীসহ ৪-৫ জন চাপাতি দিয়ে সুবর্ণা নদীকে কোপায়

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মৃত্যুর আগে হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন পাবনার নারী সাংবাদিক সুবর্ণা নদী। তিনি জানান, সাবেক স্বামী রাজিবুল ইসলাম রাজিব ও তার সহযোগী মিলনসহ চার থেকে পাঁচজন তাকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার আগে মা ও বোনের কাছে এসব নাম প্রকাশ করেন সুবর্ণা। তার মা মর্জিনা খাতুন গতকাল বুধবার জানাজার আগে র‌্যাব, পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, সুবর্ণার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সাবেক স্বামী রাজিবুল ইসলাম রাজিব, শ্বশুর আবুল হোসেন এবং সহযোগী মিলনের নামসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৭-৮ জনকে আসামি করে গতকাল সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মর্জিনা খাতুন জানান, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে সুবর্ণা একমাত্র মেয়ে জান্নাতকে (৭) নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন। জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন। বাসাও বদল করেছেন চারবার। একই কারণে গত বছর সংবাদ সম্মেলনও করেন। সুবর্ণা সে সময় বলেছিলেন, শ্বশুর আবুল হোসেন অনেক টাকার মালিক। তাই তিনি লোক দিয়ে যে কোনো সময় তাকে হত্যা বা গুম করতে পারেন। তা ছাড়া স্বামী এবং শ্বশুরের বিচারের দাবিতে প্রায়ই তিনি ফেসবুকে লিখতেন।

সুবর্ণার বোন চম্পা খাতুন জানান, পাবনার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের ছেলে রাজিবুলের সঙ্গে সুবর্ণার বিয়ে হয়। বিয়ের বছর খানেক যেতেই তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এর পরপরই সুবর্ণা পাবনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় রাজিবুল, আবুল হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করা হয়। মঙ্গলবার ওই মামলার সাক্ষ্য দেওয়ার নির্ধারিত দিন ছিল। সকালে আদালতে সুবর্ণা সাক্ষ্যও দেন। তিনি বলেন, বোন সাংবাদিক হলেও সংবাদ প্রকাশের কারণে তাকে মরতে হয়নি। তাকে জীবন দিতে হয়েছে আবুলের ছেলেকে ভালোবেসে বিয়ে করে।

পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ বলেন, এটি একটি কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ড। একজন নারীকে এভাবে কেউ হত্যা করতে পারে?

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের রাধানগর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সুবর্ণার ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে তার হাতে ও মাথায় গুরুতর জখম হয়। তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

Print Friendly

Related Posts