‘২৮ বছরের মধ্যে যারা তারাই নেতৃত্বে আসবে’

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের এই সম্মেলনে সকলে এখানে সমবেত হয়েছে। আগামীকাল সাবজেক্ট কমিটি বসবে। সেখানে কারা কারা নেতৃত্ব চায় ইতোমধ্যে দরখাস্ত পাঠিয়েছে। আমি চাই সমঝোতার মাধ্যমে তোমরা তোমাদের নেতৃত্ব নিয়ে আসো। মনে রেখো সেকরিফাইস করা শিখতে হবে। যেকোনো ব্যাপারে সেকরিফাইস না করলে অর্জন করা যায় না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্জন তখনোই করতে পারবা যখন কিছু দিতে পারবা। কাজেই তোমরা সমঝোতার মাধ্যমে করো, সেটাই আমরা চাই। ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়স ২৭ বছর করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এটা দুই বছর মেয়াদী। সেখানে নয় মাস বেশি হয়ে গেছে। আমি চাই না এই নয় মাস বেশি হয়েছে বলে কেউ বঞ্চিত হোক। তাই এটাকে আমরা এক বছর গ্রেস দিতে পারি। কাজেই ২৮ বছরের মধ্যে যারা তারাই নেতৃত্বে আসবে।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ২৯ তম জাতীয় সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এখন কোনো সেশন জট নাই। ২৩ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে মাস্টার ডিগ্রি পাস হয়ে যায়। আমি চাই তোমরা এমন নেতৃত্ব খুঁজবে যে তোমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে; যেন আগামী দিনে তোমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারো।’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আজকের ছাত্রসমাজ আগামী প্রজন্ম। ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে এই দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, তোমরাই তার কর্ণধার হবে। তোমরাই এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেজন্য রাজনীতিতে সততা, একগ্রতা এবং নিষ্ঠা থাকতে হবে।’

ছাত্রলীগের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হবে। ছাত্রলীগের যেই মূলমন্ত্র- শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি সেই শিক্ষার মশাল জ্বেলে শান্তির বাণী নিয়ে প্রগতির পথে তোমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দেশ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেটাই আমরা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোনো প্রকারের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, তার সরকার এ ধরনের অপরাধ কোনোভাবেই বরদাশত করবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমাদের ছাত্রদের বলবো— কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ধরনের ভাংচুর করা চলবে না। ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করবে— এটা আমি বরদাশত করবো না। কারণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বায়ত্তশাসন থাকলেও সেগুলো চালাতে সকল খরচ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘যদি কেউ ভাংচুর করে, সেখানে আমার কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে— সে দলের হোক, আর যেই হোক কাউকে ছাড়া হবে না, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের বাসভবন ভাংচুরের সমালোচনা করে রাজনীতির নামে শিক্ষকদের দলাদলি পরিহার এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করার জন্যও শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ওবায়দুল কাদের, ছাত্রলীগের সহ সভাপতি এবং নতুন কমিটি নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরিফুর রহমান লিমন, সম্মেলন আয়োজক উপকমিটির আহবায়ক ছাত্রলীগ সহসভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন, অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

সংঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এ সময় দলীয় পতাকা ওড়ান।

Print Friendly

Related Posts