অটিজম শিশুদের নিয়ে আবেগাপ্লুত প্রধানমন্ত্রী

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ অটিজম সচেতনতা দিবসে অটিজম শিশুদের কাছে পেলে প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিবছরই আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অটিজম শিশুদের কুশল জিজ্ঞাসা করেন, আদরে জড়িয়ে ধরেন। এই দৃশ্যে উপস্থিত অনেকেই আপ্লুত হন।

১১তম বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অটিজমে ভুগছে তাদের অবহেলা করবেন না। তারা আমাদের সমাজেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেক সুস্থ মানুষ যা পারে না সেটি পারার মত সুপ্ত প্রতিভা তাদের রয়েছে। সেই সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকশিত করার সুযোগ আমাদেরকেই করে দিতে হবে। আর সমাজে তাদের একটা সুন্দর স্থান করে দিতে হবে।’

সুস্থ মানুষকে যেভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে তেমনি যারা প্রতিবন্ধী বা যারা অটিজমে ভুগছে তাদের প্রতি সহযোগিতা করার জন্য সমাজের সবাইকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ, এটা তাদের জন্মের কোনো দোষ নয়, সেটাকে অবহেলার চোখে দেখা ঠিক নয়। এখানে সমাজের সচেতনতা একান্তভাবেই প্রয়োজনীয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি অভিভাবক এবং শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে যাতে তারা আচার আচরণ, কথা বলা ইত্যাদির মাধ্যমে অটিজমে আত্রান্তদের সুস্থ করতে ভূমিকা রাখতে পারেন। অর্থাৎ শিক্ষকরাও পারবেন তাদেরকে সুস্থ করে তুলতে। আর সেই সচেতনতাটা সৃষ্টি করা একান্তভাবেই দরকার। সেটাই আমরা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সদস্য ইসাবা হাফিজের বঞ্চনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি যখন ইসাবার বক্তৃতা শুনছিলাম তখন খুব কষ্ট হচ্ছিল। এই মানসিকতা পরিবর্তন করে সবাইকে বরং আরো সংবেদনশীল হয়ে, আরো সহানুভূতিশীল হয়ে এদেরকে (অটিজম আক্রান্তদের) আদর-ভালোবাসা দিয়ে কাছে টেনে নিতে হবে। আর তাদের মাঝে যে সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে সেই সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তুলতে হবে।’

তিনি অটিজম বক্তা ইসাবার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ইসাবা বলেছে সে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে কি না।’

‘আমি বলবো, সে দিতে পারবে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

পাবলিক পরীক্ষায় প্রতিবন্ধীদের জন্য ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় অন্যরা যে সময়ে পরীক্ষা দেয় তাদের চাইতে সাধারণভাবেই ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় বেশি দিয়ে থাকি। যেন তারা তাদের পরীক্ষাটা ভালোভাবে দিতে পারে। ইতিমধ্যে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিয়েছি।’

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

Print Friendly

Related Posts