স্ত্রীর অসম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ নয় : গুজরাট হাইকোর্ট

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ভারতে স্ত্রীর অসম্মতি সত্ত্বেও জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক, ধর্ষণ নয় বলে রায় দিয়েছেন গুজরাটের হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার ওই রায়ে বলা হয়, স্ত্রীর বয়স ১৮ বছরের বেশি হলে তাঁর অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বামী শারীরিক সম্পর্ক করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী ধর্ষণের কোনো অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করতে পারবেন না। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

বিচারপতি জে বি পরদিওয়ালা রায় দিতে গিয়ে বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী, অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনকে ধর্ষণ বলা যায় না। তাই এই ধরনের অপরাধে স্ত্রী চাইলেই তার স্বামীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে পারবে না।’ একজন নারী তার অন্যান্য অধিকারের মতোই নিজের শরীরকেও রক্ষা করতে পারেন। তাই বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য যথাযথ আইন প্রণয়ন করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে নারীদের একাংশ এই আইনের অপব্যবহারও করতে পারে এই অভিযোগে ‘বৈবাহিক ধর্ষণ বিরোধী আইন’ প্রণয়নে বাধা হতে পারে না বলে জানান আদালত। ভারতের বৈবাহিক ধর্ষণের ভয়াবহতা উল্লেখ করে নারীদের রক্ষা করতে এই আইন অবিলম্বে প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে জানান গুজরাত হাইকোর্ট।

আদালত আরও বলেন,ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় স্বামীর বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক যৌনাচারের অভিযোগ এনে স্ত্রী ফৌজদারি মামলা শুরু করতে পারেন। তবে এমন কোনো যৌনাচার যা প্রাকৃতিক নিয়মের বিরোধী তা ৩৭৭ ধারার অধীনে অপরাধ হিসেবেই গণ্য হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। এই ধারায় সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। যদিও বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পায়ুকাম বা পাশবিক যৌনাচারের মতো বিষয়গুলি বাদ দিয়ে অন্য কোনো যৌন বিকৃতিকে ৩৭৭ ধারার আওতায় অপরাধ বলে গণ্য করা যাবে না বলে আরও জানিয়েছেন বিচারপতি।

এ ছাড়া জোরপূর্বক ওরাল সেক্সকেও এই ধরনের ঘটনায় পায়ুকাম বলে কোনো স্ত্রী অভিযোগ করতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন আদালত। এমনকি স্ত্রীকে জোর করে যৌনাচারে বাধ্য করলে তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ ধারায় নারীর মানহানির অভিযোগ হিসেবে গণ্য করা যায় বলে আদালত আরও জানান।

Print Friendly

Related Posts