৬ দফা দাবিতে কোটা আন্দোলন স্থগিত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার নিয়ে গেজেট প্রকাশ ও মামলা প্রত্যাহারসহ ৬ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসা পরিষদটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের ছাত্র সমাজের দাবি মেনে নিয়েছেন, এজন্য আমরা তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই।’

তিনি বলেন, আমরা তার ঘোষণা মেনে নিয়েছি এবং গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করলাম। এ সময় মামুন আন্দোলনে সমর্থনের জন্য শিক্ষক, সাংবাদিক ও বুুদ্ধিজীবিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

পরিষদের যগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ বলেন, সারা বাংলার লক্ষ-কোটি ছাত্রদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা নিয়ে ছাত্রদের মাঝে ছোট একটি কনফিউশন দেখা দিয়েছে। আমরা চাইব এ কনফিউশন দূর করার জন্য তার ঘোষণা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হোক।

তিনি বলেন, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কোনো রকম নিপীড়ন চালানো হলে তাদের রক্ষা করতে আমরা আবারও ঐক্যবদ্ধ হবো।

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, সাধারণ ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন। আমরা বাংলার ছাত্রসমাজ তার সাথে আছি।

তিনি বলেন, আমরা আশা করি অতি দ্রুতই তার (প্রধানমন্ত্রী) ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হবে। আমরা দাবি করব, ক্যাম্পাসে পুলিশি হামলার সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

এছাড়া যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূর লিখিত বক্তব্যে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- কোটা ব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দ্রুত গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে, কর্মূসচির মধ্যে গ্রেপ্তার আন্দোলনকারীদের সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে, পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিক্ষোভ-ভাঙচুরের ঘটনায় যেসব মামলা করেছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে, ‘পুলিশি নির্যাতনে’ আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করতে হবে এবং আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের যাতে পরবর্তীতে কোনোভাবে হয়রানি করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্ত্বর হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্য হয়ে মধুর ক্যান্টিন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হল হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ওই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থাই থাকছে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‌‘আমি মনে করি কোটা ব্যবস্থা থাকলে এরকম আন্দোলন বারবার হবে। কাজেই কোটা থাকারই দরকার নাই। কোটা না থাকলে সংস্কারের প্রশ্নও উঠবে না, আন্দোলনও হবে না। আন্দোলনের ঝামেলা মেটানোর জন্য কোটা পদ্ধতিই বাতিল।’

সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ বিভিন্ন কোটার প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। এ পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করা শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রার্থীরাদের দাবি, ১০ শতাংশের বেশি কোটায় নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

Print Friendly

Related Posts