৮৬ দিন পর টগী রানীর লাশ উত্তোলন

জাকির হোসেন বাদশা, মতলব (চাঁদপুর) ॥ চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ছেঙ্গারচর বাজারস্থ মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগণষ্টিক সেন্টারে অবৈধভাবে গর্ভপাতের সময় টগি রানী সরকার নিহতের ঘটনায় মামলা পুনঃতদন্তের জন্য প্রায় ৩ মাস (৮৬ দিন) পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

সোমবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) শুভাশিস ঘোষের নেতৃত্বে লাশ উত্তোলন করে চাঁদপুর ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মতলব উত্তর থানার ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা, স্থানীয় কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম মিয়া’সহ স্থানীয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

গত ২১ জানুয়ারী ওই কিনিকে অবৈধভাবে গর্ভপাত (এমআর) করানোর ঘটনায় টগি রানী সরকারের মৃত্যুর পর লাশ গুম করার চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ওই গৃহবধুর লাশটি ষাটনল এলাকা থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। নিহত টগি রানী উপজেলার কলাকান্দা গ্রামের হিন্দুপাড়ার ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকারের স্ত্রী। পরদিন ২২ জানুয়ারী নিহতের স্বামী বাদী হয়ে ক্লিনিক পরিচালক আফরোজা মাসুদ ঝুনুকে প্রধান আসামী করে মতলব উত্তর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১১।

মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো- বালুচর গ্রামের মৃত আজিজ আহমেদের ছেলে শিপন (৩৫), ইবনাল মঈন আহমেদ রিপন (৪৫), উত্তর শিকিরচরের মৃত রহিম বক্সের ছেলে জামাল হোসেন (৪২), ঘনিয়াড়পারের মৃত ডা. জসিম উদ্দিনের ছেলে সোহাগ মোল্লা (২৫)।

এর পরদিন ২৩ জানুয়ারী ক্লিনিকের পরিচালক ও প্রধান আসামী পরিবার পরিকল্পনা সহকারি (এফডব্লিউএ) আফরোজা মাসুদ ঝুনু (৩৮), নৈশ্য প্রহরী জামাল হোসেন (৪২) এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর জন্য ক্লিনিকের দুই কর্মচারীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এরপর বিগত দিন ধরে আফরোজা মাসুদ ঝুনু হাজতে আছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে মামলা পুণঃতদন্তের জন্য টগী রানীর লাশ উত্তোলন করে পূণরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। আদালতের নিদের্শ অনুযায়ী সোমবার দুপুরে নিহতের বাড়ির পূর্ব পাশে পুকুর পাড়ে কবর থেকে টগীর লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলন কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে আলোচনা ও কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় অনেক লোকজন ভীড় জমাতে দেখা গেছে। এ দৃশ্য দেখে টগী রানী সরকারের সন্তান ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলা পুনঃতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করে চাঁদপুর ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীদের আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত করা হবে।

Print Friendly

Related Posts