বিদায়ের অপেক্ষায় বিএমপি কমিশনার রুহুল আমিন

খান মাইন উদ্দিন, বরিশাল :  তিনি একজন নিতান্তই ভালো মানুষ। আইনের রক্ষক হিসেবে উচ্চ পর্যায়ে থেকেও আইনের অপব্যবহার করেননি। বরং আইন আর অপরাধ দুটিকে দু’ভাবেই দেখেছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অপরাধীকে অপরাধীর চোখে দেখেছেন। ছাড় দেননি নিজ বাহিনীর অসৎ সদস্যদেরও। তাই খুব অল্প সময়েই বরিশালবাসির আপনজন হয়ে ওঠেন তিনি।

বরিশালবাসির সুখে, দুঃখেও পাশে ছুটে আসা সেই মিডিয়া বান্ধব মানুষটির এখন বিদায়ের পালা। তিনি হলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশকমিশনার এস এম রুহুল আমিন। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে তাকে বদলি করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এরইমধ্যে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার প্রস্থানের বিষয়টি জানান দিয়েছেন। তার বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সহকারী কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক। তিনি জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখের আগেই কমিশনার স্যার তার চলে যাবার বিষয়টি প্রকাশ করেছেন। তিনি পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সে বদলি হয়েছেন। তবে কবে তিনি বরিশালে শেষ কর্মদিবস অতিবাহিত করবেন সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নই।

তিনি শুধুমাত্র একজন পুলিশ কর্মকর্তাই ছিলেননা বরং নিজ কর্ম এবং গুনের মাধ্যমে বরিশালবাসির কাছের মানুষ হয়েছিলেন। সামাজিক ও সাংস্কৃতিকসহ সকল অনুষ্ঠান এবং কর্মসূচিতে উপস্থিতি ছিল তার। মাত্র এক ঘন্টা পূর্বে আমন্ত্রণ জানিয়েও তাকে কাছে পেয়েছেন নগরবাসি। যে কারণে তার এই প্রস্থানকে বড় কিছু হারাবার মতো করেই দেখছেন বরিশালের মানুষ।

এদিকে এস এম রুহুল আমিন পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে এই নগরীর মাদক নিয়ন্ত্রণে বেশ ভুমিকা রেখেছেন। মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত চৌকশ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে মাদকের মুল উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেছেন। নিজ বাহিনীতে থাকা অসৎ পুলিশ সদস্যদের মাদকসহ ধরে আদালতে চালান করেছেন অপরাধী হিসেবে। ছাড় দেননি কাউকে।

বিশেষ করে মিডিয়া বান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সাংবাদিকদের কাছেও প্রশংসার পাত্র ছিলেন। পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যকার দুরত্ব কমিয়ে আনতে সহায়ক ছিলেন তিনি। এক্ষেত্রে কারোর ব্যক্তি স্বার্থ খোঁজেননি। যার বড় প্রমাণ ডিবিসি টেলিভিশন এর ক্যামেরাপার্সন সুমন হাসানকে নির্যাতনের সময়ে। সুমন হাসানকে নির্যাতনকারী একজন এসআই ও দুই এএসআই সহ ৮ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তসহ শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হয়। যা শুধুমাত্র তার সদিচ্ছার কারনেই সম্ভব হয়েছে।

তার প্রস্থানের সংবাদে আজ মিডিয়া, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সদস্যরা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং পেশাজীবী অঙ্গনের মানুষও আবেগোপ্লুত হয়ে পড়েছেন।

 

 

Print Friendly

Related Posts