ঢাবি হল থেকে মাঝরাতে ছাত্রী বিতাড়ন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মাঝরাতে তিন ছাত্রীকে বের করে দিয়েছেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অভিভাবকদের ডেকে ছাত্রীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরু বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সুফিয়া কামাল হলের সামনে উপস্থিত হয়ে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

নুরুল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই রাতের আঁধারে হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দিয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসনের কাছে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন আশ্বাস ভঙ্গ করে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা রহমানের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।’

নুরুল হক আরো বলেন, ‘যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে তাঁদের বিচার হবে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কেন অভিভাবক ডেকে তাঁদের হল থেকে বের করা হচ্ছে? আমাদের অনেকে ভেতর থেকে বলেছে যে তাঁদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে যেন কেউ কথা না বলে।’

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগে রাত ১০টায় সাবিতা রেজওয়ানা রহমান ছাত্রীদের ডেকে নিয়ে ১০ এপ্রিল কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইফফাত জাহান এশার ওপর হামলাকারীদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে কয়েকজন ছাত্রী উত্তেজিত হয়ে হল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে তিনি তাঁদের মোবাইল কেড়ে নেন এবং মামলার ভয়ভীতি দেখান। এরপর রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে অন্তি, রিমি ও শারমিন নামের তিন শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন প্রভোস্ট। পরে স্বজনরা হলের গেট থেকে তাঁদের নিয়ে যান।

হল সূত্রে জানা যায়, হল প্রাধ্যক্ষ মেয়েদের তাঁর কক্ষে ডেকে নানা রকম হয়রানিমূলক কথা, অভিভাবকদের ফোন দিয়ে গালাগালি, ফোন জব্দ করাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষক আফরোজা বুলবুল  বলেন, হল থেকে ছাত্রীদের বের করার অভিযোগ সত্য নয়। এমনকি কারো সিটও বাতিল করা হচ্ছে না। কয়েকটি মেয়েকে তাঁদের স্থানীয় অভিভাবকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে কী কারণে পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে তিনি কথা বলতে চাননি।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়, এসব গুজব। বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি দুষ্টচক্র এসব ছড়াচ্ছে। আর হল প্রশাসন প্রয়োজনে ছাত্রীদের ডেকে কথা বলতেই পারে।’

Print Friendly

Related Posts