অভিনেত্রী রানী সরকার চিরনিদ্রায়

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শনিবার ভোরে রাজধানীর ইডেন মাল্টি কেয়ার হাসপাতালে রানী সরকার শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেত্রী রানী সরকারকে। সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আজ শনিবার বিকেলে তাঁকে সেখানে সমাহিত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রানী সরকারের বড় ভাইয়ের ছেলে মিজানুর রহমান।

রানী সরকারকে চিরনিদ্রায় শায়িত করার আগে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন প্রাঙ্গণে। সেখানে দুই দফা জানাজার পাশাপাশি দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান গুণী এই অভিনয়শিল্পীকে।

রানী সরকারের দুই দফা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বরেণ্য অভিনেতা আলমগীর, ফারুক, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, চিত্রনায়ক শাকিব খান, রিয়াজ, জায়েদ খান, সাংসদ নুরন্নবী চৌধুরী শাওন, পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, শাহ আলম কিরণ ও অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি ও অভিনেতা শহীদুল আলম সাচ্চু প্রমুখ।

রানী সরকার ষাট ও সত্তর দশকে খলচরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম মোসাম্মৎ আমিরুন নেসা খানম। সোনাতলা গ্রামের ইউপি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর তিনি খুলনা করোনেশন গার্লস স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন।

রানী সরকার অভিনয়জীবন শুরু করেন ১৯৫৮ সালে। শুরুতেই মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন। নাটকের নাম ‘বঙ্গের বর্গী’। ওই বছর তাঁর চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় এ জে কারদার পরিচালিত ‘দূর হ্যায় সুখ কা গাঁও’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। এরপর ১৯৬২ সালে বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশামুর রহমান পরিচালিত উর্দু চলচ্চিত্র ‘চান্দা’তে অভিনয় করেন। সেই ছায়াছবির পর থেকে তাঁর নতুন নাম হয় রানী সরকার। ‘চান্দা’ চলচ্চিত্রের সাফল্যের পর উর্দু ছবি ‘তালাশ’ ও বাংলা ছায়াছবি ‘নতুন সুর’-এ কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবি দুটি বেশ জনপ্রিয় হয়। গত শতকের ষাট, সত্তর ও আশির দশকে চলচ্চিত্রে তিনি বেশি অভিনয় করেন।

২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ২০ লাখ টাকা অর্থসহায়তা দেন। একই বছর বাংলা চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয় তাঁকে।

Print Friendly

Related Posts