স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হয়ে গেলেও হয়নি সেতু.

রাসেল হোসেন, ধামরাই (ঢাকা) : প্রায় দেড় যুগ ধরে শুধু আশ্বাস পেয়ে আসছি কিন্তু আজ পর্যন্ত সেতু পেলাম না । শুধু নির্বাচন এলে আশ্বাস পাই কিন্ত সেতু পাই না। মনের আক্ষেপ প্রকাশ করে এসব কথা বলেছেন ঢাকার ধামরাইয়ে সুতিপাড়া ইউনিয়নের বিলকেষ্টি এলাকার সাধারন জনগন। ধামরাই উপজেলার একেবারে শেষের দিকে এই গ্রাম এখানে প্রায় চারশত পরিবারের বসবাস।

নদীর এক পারে বাজার আর ঐ পারে দুর্বিসহ মানুষের বসবাস শুধু অভাব হল একটি সেতু। যার কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। এছাড়া এই নদী উপর কোন সেতু না থাকায় প্রায় ৫কিলোমিটার ঘুরে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতে হয় ঐ গ্রামের লোকজনকে।

বিলকেষ্টি গ্রামটির মধ্যে প্রায় চারশত পরিবার আছে যারা ধামরাই উপজেলার মধ্যে রয়েছে অন্যদিকে মানিকগঞ্জ জেলার মানিকগঞ্জ থানার প্রায় একশত পরিবার রয়েছে তাদের প্রত্যেকেই এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়।

এই নদী উত্তর পারে রয়েছে নওগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বড় একটি বাজার যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাট বাজার করতে আসে সেই সাথে স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রীদের এই সেতু দিয়ে পারা পার হতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে স্কুল পড়োয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের। আর এই সেতু দিয়ে পার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের।

নওগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, যে বৃষ্টির দিনে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীরা আসে না। যার কারণে দিন দিন স্কুলে ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এত আমরা। ভাল মেধাবী ছাত্র ছাত্রী হারাইতেছি। কারণ ছোট ছোট বাচ্চারা বাশেঁর সাঁকো দিয়ে আসতে ভয় পায়। তাই এই গাজীখালী নদীতে ব্রিজের খুব প্রয়োজন।

এই ব্যাপারে আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন,আমার স্কুলের ছেলে মেয়েরা অনেক ঝুঁকিতে পারাপার হয়। বিশেষ করে মেয়েরা বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে ভয় পেয়ে স্কুলে আসে না। আবার অনেকেই বাঁশের সাঁকোর ভয়ে অন্য স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বেশি কষ্ট হয় বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে। এই সময় সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে নিচে পরে অনেকেই আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

এই ব্যাপারে নওগাঁও গ্রামের এ্যাডভোকেট মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,আমরা জন্মের পর থেকে শুনে আসতেছি যে এই গাজীখালী নদীর উপর ব্রীজ হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত ব্রীজের কোন কাজ দেখতে পেলাম না। তবে শুনতেছি যে এই গাজীখালি নদীর উপর ব্রীজের সেনসশন হয়েছে কিন্তু ট্রেন্ডার আজ পর্যন্ত পেলাম আল্লাহ জানে কবে এখানে ব্রীজ হবে। শুধু নির্বাচন এলে প্রত্যেকেই শুধু আশ্বাস দিয়ে থাকে কিন্তু সেতু পায় না।

এই ব্যাপারে সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করীম বলেন, সেতুটির ব্যাপারে এলাকার জনগণ আমাকে জানিয়েছে এবং আমি নিজে ও অবগত। এই সেতুর ব্যাপারে কথা বলেছি, অতি দ্রুত সেতুটি করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এই ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইউছুব হোসেন বলেন, সেতুটির ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে করে অতি তাড়া তাড়ি সেতুটি নির্মাণ করা হয় সেই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Print Friendly

Related Posts