বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলান’র জাতীয় শোক দিবস পালন

ইসমাইল হোসেন স্বপন, ইতালি:  ইতালির মিলানে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলান অফিস মিলনায়তনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস।

সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান কর্তৃক কন্স্যুলেট মিলনায়াতনে খতমে কোরআন,মিলাদ মাহফিল,বিশেষ মোনাজাত,স্মরণ সভা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান এর কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্হানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ স্বাধীন বাংলাদেশের স্হপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

জাতির শোকাবহ এই দিনে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শাহাদাৎ বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ ঐ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হয় এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

মিলানের স্হানীয় একটি মসজিদ সন্দ্রিওর খতিব মুফতি হোসেন ইমরান বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন এবং কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সালাহউদ্দিন। গীতা পাঠ করেন কন্স্যুলেট অফিস সহকারী সুবীর।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত সকল বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মুক্ত সোনার বাংলাদেশ বির্নিমানের জন্য দোয়া করা হয়।

অনুষ্ঠানের মধ্যভাগে স্মরণসভা ও আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই কনসাল এ,কে মোহাম্মাদ শামচুল আহসান মহামান্য রাস্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কনসাল শ্রম রফিকুল করিম।

milan-2

বাণী পাঠের পর ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শৈশব, কৈশোর ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের উপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেয় প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং স্হানীয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বক্তাগণ সকলেই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতার ঘোষক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের ঘৃন্য ও বর্বরেচিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেল মিলান এর কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ এর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

সমাপনী বক্তব্যে ইকবাল আহমেদ সরকারের সাম্প্রতিক সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় শোককে শক্তিতে পরিনত করেছেন। তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে জনগনের চাহিদা অনুযায়ী তাদের জীবনমান উন্নতকরণেরর জন্য একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছেন। তাই আজকের এই দিনে আমি আপনাদের সকলকে আহবান জানাই আমরা যার যার অবস্থান থেকে সরকারের রুপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করি এবং তা করতে পারলে আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে এবং যে লক্ষ্যে তিনি তাঁর সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন আল্লাহ্‌’র অশেষ শোকরিয়া যে, ভাগ্যক্রমে বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন এবং সে কারনেই আজকে আমরা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব পেয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্নীয় স্বজন হারানোর শোককে শক্তিতে রুপান্তরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে শত শত প্রবাসী বাংলাদেশী, কন্স্যুলেটের সকল সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গ, মিলান বাঙলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ এবং স্হানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং তাঁর সংগ্রামী রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন লোম্বারদিয়া আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সবশেষে উপস্হিত সকলকে আপ্যায়ন করানো হয়।।

Print Friendly

Related Posts