ধামরাইয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ে যুবদল নেতার মৃত্যু

পরিবারের অভিযোগ, ডেকে নিয়ে হত্যা

রাসেল হোসেন, ধামরাই: ঢাকার ধামরাইয়ে হাসেম (২৮) নামে এক যুবদল নেতা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তবে পরিবারের অভিযোগ হাসেমকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হাসেম সুতিপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি।

বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শ্রীরামপুর গ্রাফিকস টেক্সটাইল কারখানার সামনে গণপিটুনির ঘটনাটি ঘটে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। নিহত হাসেম উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে।

নিহতের পরিবার জানায়, বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাসিমের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। কল পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয় হাসেম। রাতে আর বাড়ি ফেরেনি সে। এরপর নিহতের স্বজনরা থানায় গিয়ে জানতে পারে হাসেম ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সেখানে গিয়ে হাসেমের মরদেহ দেখতে পায় তার স্বজনরা।

হাসেমের বোন বীথির অভিযোগ, তার ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে জাহাঙ্গীর আলমসহ তার সহযোগিরা হত্যা করেছে। এসময় তিনি আরও জানান, এক বছর আগে আমার ভাইকে হত্যার উদ্যেশে গণধোলাই দেয়। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার ভাই বেঁচে যায়। এবার আমার ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে হত্যা করে গণধোলাইয়ের নাটক সাজিয়েছে।

এলাকাবাসি ও পুলিশ জানায়, হাসেম ও তার কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে শ্রীরামপুর গ্রাফিকস টেক্সটাইল কারখানার সামনে বিশা মিয়ার বাড়িতে গিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। এক পর্যায়ে বিশা মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া আক্তারকে মারপিট করে তারা। সুফিয়ার ডাকচিৎকারে তার ছেলে আবদুল হালিম তাদের ধাওয়া করে। এসময় হাসেমের সঙ্গী নাইম ও জহিরুলকে আটক করে। হাসেমকে গণধোলাই দিলে মারাত্মক জখম হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ হাসেমকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে হাসেম মারা যায়।

বিশা মিয়ার বাড়ী লাগোয়া প্রতিবেশী নুরু মিয়া জানান,রাত নয়টার দিকে হাসেমকে তার দোকানের পেছনে ও বিশা মিয়ার বাড়ির সামনে লোকের ভিড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছে। তবে চাঁদাবাজির কোন ঘটনা ঘটছে কিনা তার জানা নেই। অপর প্রতিবেশী দশম শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি জানায়, বিশা মিয়ার বাড়িতে কোন ডাক চিৎকারের শব্দ শুনতে পায়নি সে।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন,চাঁদাবাজি করতে গিয়ে হাসেম গণধোলাইয়ের শিকার হয়ে নিহত হয়েছে। হাসেমের নামে ধামরাই থানায় বিভিন্ন ধরনের সাতটি মামলা রয়েছে। হাসেমের মা হাসিনা বেগম বাদি হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছে। এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।

Print Friendly

Related Posts