বিশ্বে সাড়ে ৩ কোটি মানুষ অন্ধ, ২৫ কোটি দৃষ্টি স্বল্পতায় আক্রান্ত

বিশ্ব দৃষ্টি দিবস-এর আলোচনায় জানালেন বক্তারা

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বর্তমানে বিশ্বের ৩ কোটি ৬ লাখ মানুষ অন্ধত্বে এবং আরো ৬ কোটি ৫ লাখ মানুষ ছানি রোগে ভূগছে। এছাড়া ২৫ কোটি ৩০ লাখ মানুষ দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছে, যাদের ৮৯ শতাংশেরই বাস স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। ‘বিশ্ব দৃষ্টি দিবস ২০১৮’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ অন্ধত্বের শিকার, যার শতকরা ৮০ ভাগই ছানিজনিত অন্ধত্ব। অন্ধত্বের অন্যান্য কারণগুলো হলো নানাবিধ দৃষ্টিত্রুটি, গ­কোমা, আঘাতজনিত চক্ষু রোগ, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও শিশু অন্ধত্ব ।

তাদের মতে, অন্ধত্ব ও দৃষ্টি স্বল্পতার কারণগুলোর মধ্যে ৮০ শতাংশই প্রতিরোধযোগ্য।

‘সবার জন্য চক্ষু সেবা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশে ‘বিশ্ব দৃষ্টি দিবস’ পালনের অংশ হিসাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ন্যাশনাল আই কেয়ার’ এ আলোচনার আয়োজন করে। আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউট ও হাসপাতাল অনুষ্ঠিত এ আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।

blind-1

শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভি। এছাড়া তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ এবং সমাজ কল্যাণ বিষয়ক প্রাক্তন উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অফথ্যালমোলজির ভাইস-প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আভা হোসেন, অফথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল আই কেয়ারের লাইন ডাইরেক্টর ও জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা।

গোলাম মোস্তফা জানান, বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লাখ শিশু দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য। তাছাড়া ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত  আড়াই লাখ মানুষ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকিতে আছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব নির্মূলের জন্য ন্যাশনাল আই কেয়ার এবং ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর প্রিভেনশন অফ ব্লাইন্ডনেস (আইএপিবি) কাজ করে যাচ্ছে । এছাড়া ন্যাশনাল আই কেয়ারের সাথে সহযোগিতায় কাজ করছে সাইটসেভার্স, অরবিস ইন্টারন্যাশনাল, দি ফ্রেড হলোজ ফাউন্ডেশন, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, সিবিএম, ব্র্যাক, হার্ট টু হার্ট ফাউন্ডেশন ও আন্দেরী হেলফি সমন্বয়ে গঠিত ইনগো ফোরাম, এবং দেশি-বিদেশি চক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অন্ধত্ব দূরীকরণ বর্তমানে এক সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। তারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল স্রোতের ভূমিকা রাখার জন্য অন্ধত্ব দূরীকরণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

তথ্যসূত্র:  সায়িদ রুমি

Print Friendly

Related Posts