মহাষ্টমীর মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ শারদীয় দুর্গাপূজার মহাষ্টমী। মহাষ্টমী পূজার মূল আকর্ষণ কুমারী পূজা। এক বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপ চিন্তা করে সনাতনধর্মীরা তাকে ‘দেবী’ জ্ঞানে পূজা করবেন। মাতৃকাশক্তির বীজরূপা হচ্ছে বালিকা।

আজ সকালে নির্দিষ্ট কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হবে। ফুলের মালা, চন্দন ও নানা অলংকার-প্রসাধন উপাচারে নিপুণ সাজে সাজানো হবে কুমারীকে।

শ্রীরামকৃষ্ণের কথামৃতে বলা আছে- ‘সব স্ত্রীলোক ভগবতীর এক-একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর বেশি প্রকাশ।’ প্রথা ও নিরাপত্তার কারণে মেয়েটির নাম এবং পরিচয় পূজা সূচনার আগে প্রকাশ করা হয় না। সব নারীতে মাতৃরূপ উপলব্ধি করাই কুমারী পূজার লক্ষ্য।

পুণ্যার্থীরা কুমারী মায়ের সামনে প্রার্থনায় সমবেত হবেন। এ উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মিশন ও এর আশপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশনসহ দেশের কয়েকটি স্থানে আজ কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আজ মহাষ্টমীতে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমীর বিহিত পূজা, দুপুরে মহাষ্টমীর মহাপ্রসাদ বিতরণ এবং কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দীদের মধ্যে বেলা ১১টায় খাদ্য বিতরণ করা হবে।

১৯০১ সালে ভারতীয় দার্শনিক ও ধর্মপ্রচারক স্বামী বিবেকানন্দ সর্বপ্রথম কলকাতার বেলুড় মঠে ৯ জন কুমারীকে পূজার মাধ্যমে এর পুনঃপ্রচলন করেন। তখন থেকে প্রতিবছর দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে এ পূজা চলে আসছে। পূজার আগ পর্যন্ত কুমারীর পরিচয় গোপন রাখা হয়। এ ছাড়া নির্বাচিত কুমারী পরবর্তী সময়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন আচার-অনুষ্ঠান করতে পারে।

শাস্ত্র অনুসারে, অষ্টমী তিথিতে সাধারণত এক বছর থেকে ১৬ বছরের সুলক্ষণা কুমারীকে পূজা করা হয়। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যাকেও পূজার বিধান শাস্ত্রে রয়েছে। বয়স ভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। এক থেকে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত অজাতপুষ্পবালাকে কুমারী বলা হয়। বয়স অনুযায়ী তার নাম হয়ে থাকে। এর মধ্যে এক বছর বয়সে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কালিকা, পাঁচে সুভগা, ছয়ে উমা, সাতে মালিনী, আটে কুব্জিকা, নয়ে অপরাজিতা, দশে কালসন্ধর্ভা, এগারোয় রুদ্রাণী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দয় পীঠনায়িকা, পনেরোয় ক্ষেত্রজ্ঞা এবং ষোল বছরে অম্বিকা বলা হয়ে থাকে।

আগামীকাল মহানবমী ও পরশু দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

Print Friendly

Related Posts