মাদকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, সংসদে বিল পাস

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ইয়াবা, কোকেন, হেরোইন পরিবহন, কেনাবেচা, ব্যবসা, সংরক্ষণ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, হস্তান্তর, সরবরাহের অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রেখে পাস হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৮।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের ২৩তম অধিবেশনে শনিবার বৈঠকে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিল পাসের প্রস্তাব করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এর আগে বিলের ওপর আনীত সংশোধনী, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

বিলে মাদকপ্রবণ জেলা সদর বা মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক মাদক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের বিধান রাখা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনাল মাদক অপরাধের বিচার করবে। মাদক অপরাধে গ্রেপ্তারের পর তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো অপরাধীকে আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামিন প্রদানে বিরত রাখা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনে অর্থ বিনিয়োগ, সরবরাহ, মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা দিলেও একই ধরনের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনে কোকেন, কোকো মাদক চাষাবাদ, উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে ২৫ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর ২৫ গ্রামের নিচে হলে কমপক্ষে ২ বছর ও সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান আছে।

ইয়াবা বহনের ক্ষেত্রে ২০০ গ্রামের বেশি হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড। তবে ১০০ গ্রাম বা মিলিলিটার হলে সর্বনিম্ন ৫ বছর এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তির ডোপ টেস্টে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে কমপক্ষে ৬ মাস ও সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হবে।

কেউ যদি সজ্ঞানে কোনো মাদকদ্রব্য অপরাধ সংঘটনের জন্য তার মালিকানাধীন অথবা দখলি কোনো বাড়িঘর, জায়গা, যানবাহন, যন্ত্রপাতি অথবা সরঞ্জাম কিংবা অর্থ সম্পদ ব্যবহারের অনুমতি দেন তাহলে তিনি সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড ভোগ করবেন। এছাড়া, লাইসেন্সপ্রাপ্ত না এমন কোনো ব্যক্তির কাছে অথবা তার জায়গায় যদি মাদকদ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহারযোগ্য কোনো যন্ত্রপাতি, ওয়াশ অথবা অন্যান্য উপকরণ পাওয়া যায় তাহলে তিনি সর্বনিম্ন ২ বছর কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হবেন।

বিলে আরো বলা হয়েছে, অনুমতি ব্যতিত কোনো ব্যক্তি অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না এবং চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন অথবা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অন্য কোনো সহযোগী অধ্যাপকের লিখিত ব্যবস্থাপত্র ব্যতিত কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পান করার অনুমোদন দেওয়া যাবে না।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, রুস্তম আলী ফরাজী, বেগম মাহজাবীন মোরশেদ, ডা. আককাছ আলী সরকার, বিলের ওপর জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

Print Friendly

Related Posts