বোলারদের দাপটে জিম্বাবুয়ের বড় লিড

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ মুস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী ও নবাগত খালেদ আহমেদকে নিয়ে স্কোয়াড ঘোষণা করে করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ১৪ সদস্যের দলে ৪ পেসার দেখলে যে কেউই ভাবতে পারে সিলেটের উইকেট পেস বান্ধবই হতে যাচ্ছে। সেই ধারণাকে পাল্টে মাত্র এক পেসার নিয়ে মাঠে নামে স্বাগতিকরা। বিপরীতে দলে নেয়া হয় তিন স্পিনার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও এত সাবধানী বাংলাদেশ হয়ত প্রত্যাশার বাইরেই ছিল।

তিন স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমে আশার প্রতিদানও দেন স্পিনাররা। জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসের শুরুতেই ব্রায়ান চারি ও অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলরকে আউট করে দিনটাকে নিজেদের করে নেয়ার আভাস দেয় টাইগাররা। কিন্তু মাসাকাদজা, শেন উইলিয়ামস ও পিটার মুরের অর্ধশতকে ৫ উইকেটে ২৩৬ রান নিয়ে দিনটাকে ভাগাভাগি করে নেয় দুইদল। ৫ উইকেটের ৪টিই নেন স্পিনাররা।

মাসাকাদজার উইকেট নেন সিলেটেরই ঘরের ছেলে রাহী। দ্বিতীয় দিনের সকালে বাকি ৫ উইকেট নিয়ে দিনটা বাংলাদেশের হচ্ছে! এমনটাই আভাস দেয় ওই স্পিনাররাই। ইনিংসে তাইজুল ইসলাম ৬ উইকেট তুলে নিলে ২৮২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপু ২টি এবং অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ নেন ১টি উইকেট।

জিম্বাবুয়ের পুরো ইনিংস জুড়ে যেখানে ছিল টাইগার স্পিনারদের দাপট সেখানে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই বদলে যায় রূপ। টেন্ডাই চাতারা ও কাইল জার্ভিস মিলে ধস নামায় বাংলাদেশের টপঅর্ডারে। ১০ ওভারের মধ্যে ১৯ রান দিয়ে চার উইকেট নিয়ে ব্যাটসম্যানদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেন এই দুই পেসার।  ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ইনফর্ম ইমরুল কায়েসকে বোল্ড করেন চাতারা। সেই দলে যোগ দিয়ে জার্ভিসও তুলে নেন আরেক ওপেনার লিটন দাসকে। উইকেট কিপার চাকাভাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৯ রান করেন লিটন।

সাকিবের জায়গায় খেলতে নেমে সাকিবের অভাবকে আরও দৃশ্যমান করেন নাজমুল হাসান শান্ত। চাতারার দ্বিতীয় শিকার হয়ে যাবার আগে করেন মাত্র ৫ রান। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ নেমে দ্বিতীয় বলেই হতাশ করেন। রানের খাতা খোলার আগেই চাতারার তৃতীয় শিকারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন দলপতি। ১৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পথ হারানো বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মুশফিক ও টেস্ট স্পেশালিস্ট খ্যাত মুমিনুল হক।

৩০ রানের জুটিতে সমর্থকরা যখন আশার আলো খুঁজছিল তখনি সিকান্দার রাজার বলে মাসাকাদজাকে ক্যাচ দিয়ে সেই আশার বাণে পানি ঢালেন মুমিনুল। ১১ রান করে সাজঘরে ফিরেন এই বাম-হাতি ব্যাটসম্যান। এরপর বেশিক্ষণ দাঁড়াতে পারেননি মুশফিকও। জার্ভিসের বলে ৩১ রানে আউট হয়ে গেলে লিড নেয়ার আশাদূর হতে থাকে।

অভিষিক্ত আরিফুল হক ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে রানটাকে কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টা করলেও মিরাজের আউটের মধ্য দিয়ে তাও শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ক্রিজের এক প্রান্তে ৪১ রান নিয়ে টিকে থাকেলও যোগ্য সঙ্গীর অভাবে নিজের ক্যারিয়ার প্রথম ম্যাচে অর্ধশতক তুলে নিতে ব্যর্থ হন আরিফুল।

বাংলাদেশকে ১৪৩ রানে অলআউট করে ১৩৯ রানের বড় লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং এ নামে জিম্বাবুয়ে। শেষ বেলায় ২ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১ রান নিয়ে মাঠ ছাড়ে দুই দল। দিন শেষে সফরকারী বোলাররা দিনটা নিজেদেরই করে নিলো।

Print Friendly

Related Posts