বৈশাখী, যার জন্য কলকাতার মেয়রের পদ ও মন্ত্রিত্ব সবই হারালেন শোভন

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যার জন্য সদ্য কলকাতার মেয়রের পদ ও মন্ত্রিত্ব সবই হারাতে হলো শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। সেই বৈশাখী যেন হঠাৎই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।

বৈশাখীর সাহসী প্রশ্ন, ‘বাঙালিদের ঘরের কোণে গোপনে যা হয় সেটা সিদ্ধ৷ আর আমাকে শপিং মলে দেখা গিয়েছে বলে আমি খারাপ’৷

তিনি মাথা হেট করার মেয়ে নন৷ ১৭ বছর ধরে নিজের চাকরিজীবনে লড়াই করে আসছেন৷ তাই এবার আড়ালে না গিয়ে সমাজের মুখোমুখি লড়াই করার প্রতিজ্ঞা করেছেন বৈশাখী৷

বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ গত কয়েকদিন ধরে বহু চর্চিত একটি নাম৷ মন্ত্রিত্ব-মেয়র পদ যাওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জীবনে কেউ কেউ তাঁকে ‘কালবৈশাখী’ আখ্যা দিয়েছেন৷ কিন্তু, এই বৈশাখীর জীবনেও বয়ে গিয়েছে বহু কালবৈশাখী৷ স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে সেই বড় বড় ঝড় তিনি একাই সামলেছেন৷ লড়াই করেছেন৷ জিতেওছেন৷

কয়েকদিন ধরে সংবাদমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে যা চলছে তা মানতে পারছেন না মিল্লি অল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সদ্য মেয়র-মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব নিয়ে একশ্রেণির মানুষ যেভাবে মুখরোচক গল্প বানিয়েছে তাতে ক্ষোভে ফুটছেন তিনি৷

shovan

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বিয়ের মধ্য থেকে যিনি ঠকালেন তার প্রতি সমাজের সহানুভূতি রয়েছে৷ আর বন্ধু হিসেবে কোনও বিধ্বস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি বলে আমাকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে৷ একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী যে রাজ্যে আছে সেখানে এত সংবেদনহীনতা আমাকে কষ্ট দেয়’৷

বৈশাখী বলেন, ‘আমি কোনও রম্ভা, উর্বশী নই৷ যে সবাই আমার প্রেমে পড়ে যাবে৷ সবারই নিজের বিচার-বুদ্ধি রয়েছে৷ অবাক লাগে কী সমাজে আমরা বাস করছি৷ যেখানে আজও কোনও পুরুষের সংসার ভাঙার জন্য নারীদের দায়ী করা হয়৷

তিনি বলেন, আমরা ফেমিনিস্টরা যা করতে পারিনি শোভন চট্টোপাধ্যায় তাই করেছেন৷ উনি একজন মহিলার সম্নানের জন্য লড়ছেন৷’

তবে বৈশাখীর আশা সমাজ একদিন বদলাবে৷ তার মেয়ে অন্তত সেই ভালো সমাজকেই দেখবে৷

একজন হিন্দু মহিলা মুসলিম কলেজে পড়াবেন, তা অনেকে মানতে পারেননি৷ বৈশাখীর উপর চাপ সৃষ্টি হয়৷ বৈশাখীর সরাসরি অভিযোগ ছিল, প্রয়াত তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুলতান আহমেদের বিরুদ্ধে৷ তখন রাজ্যে শাসকের চেয়ারেও রয়েছে তৃণমূল৷ কিন্তু, পিছু হটেননি এই ন্যাশানাল স্কলার৷ ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এবং সেখানেও জয়ী হয়েছিলেন তিনি৷ জেতার পর ওই কলেজেই মাথা উঁচু করে ঢুকেছিলেন তিনি৷ এদিন যে কলেজ থেকে তাঁকে ‘কার্যত’ ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, তিনি আইনি লড়াই জিতে মিল্লি অল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষার চেয়ারে বসেন৷

Print Friendly

Related Posts