হরিরামপুরে জাপা ও দৌলতপুরে বিএনপি প্রার্থীর গাড়ি বহরে হামলা ও ভাঙচুর

জাহিদুল হক চন্দন. মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও জেলা সদরের তিনটি ইউনিয়ন) আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ এস এম আবদুল মান্নানের গাড়ি বহরে শনিবার যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন সংবাদকর্মীসহ ওই প্রার্থী কমপক্ষে নয়জন কর্মী আহত হয়েছেন।

এ দিকে শনিবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ-১ আসনের (শিবালয়, ঘিওর ও দৌলতপুর) আসনের বিএনপির প্রার্থী এস এ জিন্নাহ কবীরের গাড়ি বহরে হামলা হয়েছে।এতে তাঁর বহরে থাকা ৪টি প্রাইভেটকার ও ২টি হায়েস গাড়ি ভাংচুর সহ তার ৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

হামলায় জাতীয় পার্টির আহত নেতা-কর্মীরা হলেন, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ন সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন খান, সিঙ্গাইর উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক আবদুস সালাম, যুব সংহতির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন, হরিরামপুর উপজেলা ছাত্র সমাজের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক শরীফুল ইসলাম, আবদুল মান্নানের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) রাসেল আল-মামুন, ছোট ভাই বাবুল হোসেন ও গাড়িচালক আওলাদ হোসেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় স্থানীয় দৈনিক ‘আমার নিউজে’র স্টাফ রিপোর্টার শুভঙ্কর পোদ্দারের মাথায় রক্তাক্ত জখম হয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির আহত তিনজন হলেন, কামরুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। তাঁরা বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

দলীয় এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা বাজার ও মাচাইন বাজারে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আবদুল মান্নানের গণসংযোগ করার কথা ছিল। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বেলা একটার দিকে তাঁর মোটরসাইকেল ও গাড়ি বহর হরিরামপুরের কান্ঠাপাড়া এলাকা পৌঁছালে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী সেখানে বাধার সৃষ্টি করেন। পরে সেখান থেকে বহর নিয়ে ঝিটকা বাজারে যাওয়ার পথে হরিরামপুর উপজেলা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে বহরে হামলা করেন। এ কারণে তাঁর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে পারেননি।

আবদুল মান্নান অভিযোগ করেন, উপজেলা চত্বরে পৌঁছার পরই উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর গাড়ির কাচ ও দুই-তিনটি মোটারসাইকেল ভাঙচুর করে। এ সময় হামলায় তাঁর ১৫-২০ জন সমর্থক ও কর্মী আহত হন। এ ঘটনা তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ করবেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে যুবলীগের নেতা আমিনুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের কেউ জড়িত নয়। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে এই ঘটনা কিংবা বিএনপির লোকজন এই হামলা করতে পারে বলে তিনি দাবি করেন।

হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তিনিসহ কয়েক পুলিশ সদস্য নিযে যান। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

এ দিকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী এস এ জিন্নাহ কবীরের প্রচারনায় হামলা হয়েছে।  এতে প্রচারণায় থাকা ৪টি প্রাইভেটকার ও ২টি হায়েস গাড়ির ভাংচুর সহ আহত হয় ৫ জন। এ ব্যপারে রাতেই মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সুত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলা সদরে মোটরসাইকেল ও গাড়ির বহর নিয়ে প্রচারণায় যান যান বিএনপির প্রার্থী জিন্নাহ কবীর। এর পরপরই ওই স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে গেলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল কদ্দুস ১৫/২০ জন যুবক নিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একদল তাদের বহরে থাকা ৪টি প্রাইভেটকার ও ২টি হায়েস গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ছাড়া হামলায় তাঁর ৫ কর্মী আহত হন।   এ ঘটনায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন জিন্নাহ কবীর।

এ ব্যপারে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল কদ্দুস বলেন, যে সময় বিএনপির প্রার্থীর এস এ জিন্নাহ কবীরের হামলা হয় ওই সময় আমি ঘিওর উপজেলায় এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপির নির্বাচনী প্রচারনায় ছিলাম।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম ফেরদৌস বলেন, এসব ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Print Friendly

Related Posts