`পুলিশ কর্মকর্তাদের হত্যার চক্রান্ত হচ্ছে’

নব্বইয়ের গণআন্দোলনের পর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠেয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রধান দুই পক্ষের একটি আওয়ামী লীগ জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা।

নির্বাচন থেকে বিরোধী নেতাকর্মীদের সরিয়ে রাখতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পুলিশকে ‘অপব্যবহার’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন অপরপক্ষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন। এজন্য তাদের বিচারেরও হুমকি দিয়েছেন তিনি।

এই প্রেক্ষাপটে ৮৮ জন সাবেক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন জানাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে গেলে ‘ষড়যন্ত্রের’ ওই কথা বলেন শেখ হাসিনা।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “তাদের দুইটা পরিকল্পনা, এই পরিকল্পনাতো একটা ক্রিমিনাল আছে লন্ডনে, সে বসে বসে পাঠায়। একটা হচ্ছে পুলিশকে পয়সা দিয়ে হাত করা, আরেকটা হচ্ছে এদেরকে হত্যা করে এদের ডিমোরালাইজড করা, এই দ্বিমুখী পরিকল্পনা নিয়ে তারা এগোচ্ছে।”

পাঁচ বছর আগে দশম সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোটের আন্দোলনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা হয়। এরপর ওই নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে ২০১৫ সালের প্রথম তিন মাস তাদের হরতাল-অবরোধে নাশকতায় মারা যান বহু মানুষ।

ওই ঘটনা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “খুনি, অগ্নিসন্ত্রাসী… ওরা পুলিশকে যেভাবে হত্যা করেছে, সেটা চিন্তাও করা যায় না। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা, পিটিয়ে পিটিয়ে মারা-এত জঘন্য কাজ তারা করতে পারে! এখনো শুনি, নির্বাচন সামনে রেখে নাকি তাদের মূল টার্গেটই হবে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কিছু মেরে ফেলে দেবে।”

তবে এসব ‘ষড়যন্ত্র’ করে লাভ হবে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার এই আত্মবিশ্বাস আছে, এখন তারা যেটা চিন্তা করে পুলিশ এখন সেটা না। এখন অনেক দক্ষতা অর্জন করেছে, অনেক আত্মবিশ্বাস পুলিশের মধ্যে ফিরে এসেছে।”

পুলিশ তাদের ‘দায়িত্ব ও কর্তব্য কঠিনভাবে’ পালন করে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেটা যদি তারা না করত, সন্ত্রাস দমন আমরা করতে পারতাম না, এই জঙ্গিবাদ দমন আমরা করতে পারতাম না। আজকে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা যে অভিযান চালিয়েছি, সেটাতে সফল হতে পারতাম না।”

পুলিশের উপর জনগণের আস্থা ‍ও বিশ্বাস তৈরি হয়েছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, “যে কোনো দুর্যোগ আসলে মোকাবেলা করার মতো ক্ষমতা আমাদের আছে। মানুষের সচেতনতাও যথেষ্ট রকম আছে।”

গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ের জন্য একটি জাতীয় কমিটি করায় ‘খুব সহজে’ তথ্যগুলো পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

“এই কো-অর্ডিনেশনটার কারণে দেখবেন অনেক ঘটনার চেষ্টা করা হচ্ছে, কিন্তু সেটা তারা ঠিক করে ফেলছে।”

সাবেক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন সাবেক আইজিপি, ১৯ জন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও ২৪ জন সাবেক ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি ‘অকুণ্ঠ’ সমর্থন জানিয়ে অনুষ্ঠানে সাবেক আইপিজি শহীদুল হক বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি যদি ক্ষমতায় না আসে তাহলে এতো উন্নয়ন ধ্বংস হয়ে যাবে।”

Print Friendly

Related Posts