রংপুরে আইনজীবী বাবু সোনা হত্যায় স্ত্রী স্নিগ্ধার ফাঁসি

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যা মামলার বিশেষ পিপি রথিশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকারকে করে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ নিযামুল হক আদালতে স্নিগ্ধাকে দোষী সাবন্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের আদেশ দেন।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি দীপাকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।

এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমীন মুক্তার আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আল-আমিন।

পরে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো করা হয়। ওই বছরের ২১ অক্টোবর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচারকাজ শুরু করেন বিচারক।

রংপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মালেক বলেন, গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমীন মুক্তার আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন রংপুর জেলা কোতোয়ালি থানা পুলিশের এসআই আল-আমিন। পরে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। ওই বছরের ২১ অক্টোবর অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে বিচারকাজ শুরু করেন বিচারক এবং ৩০ অক্টোবর থেকে এই হত্যা মামলার স্যাগ্রহণ শুরু হয়।
পিপি আব্দুল মালেক বলেন, গত বছরের ২৯ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে বাবুসোনাকে ১০টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর তার মরদেহ তাজহাট মোলাপাড়ায় প্রেমিক শিক কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ির ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হয়।

পরবর্তীতে ৩ এপ্রিল মধ্যরাতে বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব আটক করে। তিনি এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন এবং মরদেহের অবস্থান সম্পর্কে জানান।

সেই সূত্র ধরে ওই দিন রাতে মোল্লাপাড়ার ওই বাড়ির মেঝে খুঁড়ে নিহত আইনজীবী বাবুসোনার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মামলায় মোট ৩৭ জন সাীর স্যাগ্রহণের পর চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি উভয় পরে যুক্তিতর্ক শেষে মঙ্গলবার রায়ের দিন নির্ধারণ করেন বিচারক। মামলার চার্জশিটভুক্ত দুই আসামির মধ্যে একমাত্র জীবিত আছেন নিহত বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দীপা। তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম গত বছরের ১০ নভেম্বর ভোরে কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টা করলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পরপরই মারা যান কামরুল।

পরে বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ওরফে দীপা, প্রেমিক কামরুল ইসলাম, বাবুসোনার সহকারী মিলন মোহন্তু ছাত্র মোল্লাপাড়া এলাকার সবুজ ইসলাম ও রোকনুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন দীপা ও কামরুল। সেই সঙ্গে মিলন মোহন্তও হত্যাকান্ডের বিষয়ে পুলিশকে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।

ওই বছরের ১৩ এপ্রিল রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিলন মোহন্ত। হত্যাকান্ডের দুই শিার্থী রোকন ও সবুজের সম্পৃক্ততা খুঁজে না পাওয়ায় এবং মিলন মোহন্ত মারা যাওয়ায় তাদেরকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় বাবু সোনার ছোট ভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পুলিশ নিহতের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার ও কামরুল ইসলামকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে।

 

http://bdmetronews24.com/37957-2/

Print Friendly

Related Posts