ছায়ানট ভবনে উৎসবমুখর আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত

বিডিমেট্রোনিউজ ডেস্ক ॥ ধানমন্ডিস্থ ছায়ানট ভবনে “ইউবিআর বাংলাদেশ এলায়েন্স” “হ্যালো আই এ্যাম” কনসোর্টিয়াম, এবং “আরএইচআরএন প্লাটফরম” এর যৌথ আয়োজনে উদযাপিত হল আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল : থিংক ইক্যুয়াল, বিল্ড স্মার্ট, ইনোভেট ফর চেঞ্জ। যা বাংলায় সবাই মিলে ভাবো, নতুন কিছু করো-নারী পুরুষ সমতার নতুন বিশ্ব গড়ো। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রবিবার বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের মহিলা ও শিশু বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, এমপি । বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজকীয় নেদারল্যান্ডস এর বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের সম্মানিত রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েইজ এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. অসা টর্কেলসন।

আদিবাসী দল মাদল এর ঢোল বাদনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং শেষে সংগীত শিল্পী সায়ান গান পরিবেশন করেন। বিশেষ আকর্ষণ ছিল সত্ত্বা নামক হিজড়া সম্প্রদায়ের দলীয় নৃত্য পরিবেশনা এবং কিশোর-কিশোরী ও যুবদের অংশগ্রহণে নারীর জীবনচক্র নিয়ে নাটিকা “চক্রভঙ্গ”। অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন আফরোজা বেগম।

প্রধান অতিথি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অগ্রসর হয়েছে। তিনি নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকার নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্বের ভূমিকা এবং ব্যবসা উদ্যোগে প্রবেশাধিকার নারীর ক্ষমতায়নকে নিশ্চিত করছে। নারী-পুরুষের সমতা অর্জনে সরকারের এ উদ্যোগকে সফল করতে বেসরকারি সংস্থাসহ সকলকে এগিয়ে আসতে বলেন।

নেদারল্যান্ডস এর রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ সম্মিলিত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন- তার সরকার নারী ও মেয়ে শিশুদের লিঙ্গ সমতা অর্জনে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। নারীর প্রতি সকল সহিংসতা প্রতিরোধ, রাজনীতিতে সমনাগরিকত্ব, অর্থনেতিক স্বাধীনতা ও সমাজের সকল স্তরে নারী-পুরষের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে।

তিনি আরো বলেন নেদারল্যান্ডেস এর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। নেদারল্যান্ডস এর বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের অংশগ্রহণে এই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনকারী বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সাথে যুক্ত থেকে আগামীতে আরো কাজ করার আশা ব্যক্ত করেন। আগামীতে নারী ও মেয়েদের প্রযুক্তির ব্যবহারে অভিগম্যতা, সিদ্ধান্তমূলক অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের উপর জোর দেন।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. অসা টর্কেলসন বলেন, যেকোনো জাতির জেন্ডার সমতা অর্জনের মূল বিষয় নারীর ক্ষমতায়ন। তিনি জোর দিয়ে বলেন জেন্ডার সমতা অর্জন ছাড়া ২০৩০ এর মধ্যে এসডিজি অর্জন করা সম্ভব হবে না।
অন্যান্যদের মধ্যে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপিএস এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, ডিএসকে এর এর নির্বাহী পরিচালক ডাঃ দিবালোক সিংহ, পিএসটিসির এর নির্বাহী পরিচালক ডঃ নূর মোহাম্মদ, আরএইচস্টেপ এর এর নির্বাহী পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা, বন্ধুর এর নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমদ এবং নারী পক্ষের হাবিবুন নেসা।

তারা সকলে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও সমতা অর্জনের প্রয়াসের সাথে একাত্ম প্রকাশ করেন। আয়োজনকারী এলায়েন্স ও নেটওয়ার্কের সাথে অর্ন্তভূক্ত সকলেই বিশ্ব হ্যাস টেগ মুভমেন্টের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।

Print Friendly

Related Posts