যুবনেতার মাটির ব্যবসায় অতিষ্ঠ ঘিওরের মানুষ!

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পুখরিয়া গ্রামে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন জেলার এক যুব নেতা।

ফসলি জমি থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ওই যুবনেতার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে সাহস পায়না। কিছু বলতে গেলেই নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।

ঘিওরের বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পুখরিয়ার স্বপ্নমোড় থেকে দক্ষিণ দিকের বিবিরাস্তি রাস্তার পাশের তিন ফসলি কৃষি জমি থেকে অবাধে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার চিত্র দেখা গেছে। প্রায় ৮০ শতাংশ কৃষি জমির মাটি খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে রাইজার ট্রাকে মাটি ভরা হচ্ছে। মাটি বহন করা সেই ট্রাকগুলো ওই মাটির কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। ফলে মাটির কাঁচা রাস্তাটির দু-পাশ দেবে গেছে। এতে চলাচল করতে পারছে না রিকশা-ভ্যান ও অটোরিকশা।

।স্বপ্নমোড় থেকে মাটির কাঁচা রাস্তাটিতে বিবিরাস্তি হয়ে বতুনী, ঝিটকাসহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ চলাচল করতো। কিন্তু মাটিবহনকৃত রাইজার ট্রাক চলাচলের কারণে ওইসব এলাকার মানুষদের চলাচল করতে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাটির রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলাচল করার কারণে ধুলো-বালিতে সড়কের পাশের বাড়ির শিশুসহ লোকজনদের কষ্টের শেষ নেই। প্রশাসনও যেন ভীত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বললেন, আমরা তো কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ। যারা এই মাটির ব্যবসা করছে তারা তো অনেক ক্ষমতাবান ও প্রভাবশালী। এই জন্য কিছু বলতেও ভয় পাই। কিছু বলতে গেলে আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখায়।

তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটের ভাটায় বিক্রি করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওই যুবনেতার ব্যবসায়িক অংশীদার বিজন রায় বলেন, ‘ইফতি আরিফ ভাই ও আমি জমির মালিকের কাছ থেকে মাটি কিনে ইটভাটাসহ এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছি। জমির মালিক এখানে পুকুর খনন করবে এজন্য আমরা মাটি কিনে নিয়েছি। ’

কৃষি জমি রদবদল করার বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর এবং উপজেলা ভূমি অফিসের কোন লিখিত অনুমিত আছে কিনা জানতে চাইলে বিজন রায় বলেন, আমাদের সব কাগজপত্রই আছে। কিন্তু দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি।

এদিকে, পুখরিয়া স্টোন ব্রিক্সের পাশের ইছাক মিয়ার ইটভাটার পিছনে তাদের আরেকটি মাটির সাইট রয়েছে। সেখানেও বড় বড় খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে।

এব্যাপারে ঘিওর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখি জানান, পুখুরিয়াতে কৃষি জমির মাটি কাটার ব্যাপারে কেউ এখনও অভিযোগ করেনি। এবং বিষয়টি তার জানা নেই। তবে, সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

Print Friendly

Related Posts